হত্যা, সন্ত্রাস, ধর্ষণ যার নিত্যদিনের কাজ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবি নগরের কাইতলা ইউনিয়নের দূর্ধষ সন্ত্রাসী রিপন মিয়া এক ভয়ংকর আতঙ্কের নাম।হত্যা, সন্ত্রাস,খুন ,ধর্ষণ ও জমি দখল যার নিত্যদিনের কাজ। বিগত কয়েক বছর যাবৎ নবী নগরের মূর্তিমান আতঙ্কের নাম হচ্ছে রিপন মিয়া। থানা প্রশাসন হতে শুরু করে সব তার কথায় উঠবস করে। তথ্য সূত্রে জানা যায় নবী নগরের কাইতলা ইউনিয়নে রিপন মিয়ার আছে আলাদা আদালত, আছে টর্চার সেল। তার আদালতের রায় অনুযায়ী চলতে হয় সকলকে। এমনকি তাকে কোনো অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ না করলে গুনতে হয় জরিমানা। টোকাই থেকে রিপন এখন শতকোটি টাকার মালিক। আওয়ামী লীগ করার সুবাদে রিপন এখন সর্বেসর্বা। তথ্য সূত্রে জানা যায়, রিপন দেখতে একটু বয়স্ক হলেও প্রতি রাতে তার উঠতি বয়সি মেয়ে নাহলে আসর জমে না। শুধু তার নিজের জন্য নয় রাজনৈতিক নেতা ও প্রশাসনের বড় কর্তা বাবুদের মনোরঞ্জন ও তার কাজ হাসিলের জন্য সুন্দরী রমনীদের সবসময় পাঠিয়ে থাকেন রিপন। এলাকার প্রভাব বিস্তারের জন্য, মানুষের জমি দখল ও সবসময় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে একদল মাশেল বাহিনী গঠন করেন রিপন। পুরো এলাকায় মাদকের সয়লাব করে যুব সমাজকে ধ্বংস করে ফেলেছে। ইতি মধ্যে পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মাদকের কর্তা বাবু হিসেবে পরিচিত রিপন মিয়া। তথ্য সূত্রে আরো জানা যায়, রিপন মিয়ার আদালতে কারো বিরুদ্ধে রায় হলে সাজা স্বরূপ করা হয় মোটা অংকের জরিমানা তা হচ্ছে তিন লাখ,চার লাখ টাকা অথবা গো মূত্রের কুয়ায় দাঁড়িয়ে থাকা আর না হয় পাঙ্গাশ মাছের ঘেরে হাত পা বেঁধে এক ঘন্টা ফেলে রাখা।
তার কথার অবাধ্য হলে রাতের আঁধারে টেটা দিয়ে কুপিয়ে মেরে মাছের খাবারে পরিনত করেছেন এরকম অনেক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার অনেক প্রবীণ ব্যক্তিরা। অনুসন্ধানে জানা যায়, রিপনের নামে বেনামে প্রায় ৩/৪ হাজার কানি জমি আছে। এলাকায় তার দূটি এগ্ৰো ফার্ম ১ হাজার ৫ শত কানি জমির উপর অবস্থিত। এলাকায় কেউ কোনো জমি বিক্রি করতে হলে তার কাছে বিক্রি করতে হবে। অনুসন্ধানে আরো বেড়িয়ে এসেছে তার এলাকার বুটাই পার্শ্ববর্তী নারুই গ্ৰামের ইউপি সদস্য জাকিরের কাছে জমি বিক্রি করার কারণে বুটাইকে রাতের আঁধারে হাত-পা বেঁধে তার টর্চার সেলে নিয়ে আসে। জোর পূর্বক বুটাইর কাছ থেকে ব্লান্ক ষ্ট্যাম্প স্বাক্ষর রেখে জমি দখল করে নিয়ে নেয়।
তার বিরুদ্ধে তৎকালীন সময়ে শেখহাসিনার কাছে অভিযোগ গেলেও প্রশাসন ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে আছেন রিপন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগের পক্ষে তার সন্ত্রাসী বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে নির্বিচারে গুলি করে ছাত্র জনতা হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, ধর্ষণের মামলা থাকলেও ফ্যাসিস্ট হাসিনার কিছু দোসর প্রশাসনের কারণে গ্ৰেফতার হচ্ছে না। ২০২২,২০২৩ ও ২০২৪ সালের একাধিক নাশকতার মামলায় অভিযুক্ত আসামি থাকলেও অদৃশ্য ইশারায় পার পেয়ে যাচ্ছে রিপন।
প্রায় দুই বছর পূর্বে তার গ্ৰামের জুঁই নামের এক মহিলা স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে এসে নিজেই ধর্ষিত হন রিপনের কাছে। অস্ত্রের ভয়ে মামলা দিতে পারেন নি। স্বামী হারা অসংখ্য মহিলার স্বপ্ন পুরুষ হচ্ছেন রিপন। এব্যাপারে স্থানীয় নবী নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক সময়ে রিপনের একটি বড় সন্ত্রাসী বাহিনী ছিল এখন অনেক টা ভালো হয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে অনেক মামলা আছে তাকে কেন গ্ৰেফতার করছেন না? উত্তরে ওসি বলেন, অনেক মামলায় জামিন নিয়েছেন। তারপরও অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় বি এন পি সভাপতি বলেন, রিপন কাইতলা ইউনিয়নকে তার অঙ্গ রাজ্য হিসেবে ব্যবহার করতো। একসময় সে নিজেকে এই এলাকার গড হিসেবে পরিচয় ছিল। জামায়াত, বিএনপিসহ অন্য কোন রাজনৈতিক দল মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারতনা। বিগত ষোল বছরে বিরোধী দলগুলো তাদের কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে রিপনের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে অনেক কে। স্থানীয় জামায়াত আমিরকে রিপনের স্বর্গরাজ্যের ব্যপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে উপর আল্লাহর ক্ষমতার উপর কারো ক্ষমতা টিকে না রিপনের ক্ষমতা ক্ষণস্থায়ী কয়েক দিন সন্ত্রাসের রাম রাজত্ব চালিয়েছিল মাত্র। সন্ত্রাসের রাজত্ব বেশি সময় ধরে টিকে না।৫ ইং আগস্টের পরও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ও রাজনৈতিক সহাবস্থানে টিকে থাকার কিছু অসাধু ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের বিনিময়ে রিপন এখন বহাল তবিয়তে। এব্যাপারে অভিযুক্ত রিপনকে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে তার অপকর্মের ফিরিস্তি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনার যা শুনেছেন তা পুরোপুরি সত্য নহে একদল কুচক্রী মহল আমার পিছনে আমার বিরুদ্ধে উঠে পরে লেগেছে। আমি ব্যবসা করি আর খাই। আমার কয়েকটি মাছের খামার আছে, দুইটি এগ্ৰো ফার্ম আছে এবং কয়েক হাজার বিঘা ফসলি জমি আছে। তা দেখে অনেকের হিংসার আগুনে আমি জ্বলে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছি। অজানা অনেক মামলায় আমাকে জড়ানোর হয়েছে। একসময় আমি আওয়ামী লীগের কর্মী ছিলাম এখন আওয়ামী লীগ থেকে মুক্ত। আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাব। ভুক্তভোগী সাধারণ জনগণ বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে এখন তার দোসরদের পতন হোয়া দরকার। রিপনের সকল প্রকার অপকর্মের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি প্রশাসনের কাছে।