পটুয়াখালীতে কলেজছাত্রীকে প্রকাশ্যে নির্যাতন, অভিযুক্ত বিএনপি নেতার ছেলে

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :
পটুয়াখালীর এক কলেজছাত্রীকে রাজনৈতিক মতের ভিন্নতার কারণে প্রকাশ্যে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতার ছেলের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী আওয়ামী লীগের পক্ষে সামাজিক মাধ্যমে মত প্রকাশ করায় তার উপর এ বর্বর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

ঘটনাটি ঘটে শনিবার সন্ধ্যার পর, শহরের একটি ব্যস্ত সড়কে। প্রত্যক্ষদর্শী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া তথ্যমতে, বিএনপি নেতা লুৎফর মোল্লার ছেলে সানি ও তার সহযোগী একটি বখাটে গ্রুপ ওই ছাত্রীকে রাস্তায় একা পেয়ে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। মেয়েটিকে টানাহেঁচড়া ও মারধর করার সময় সে চিৎকার করে বলে, “বাঁচাও বাঁচাও, কে আছো আমাকে বাঁচাও!”

এই ঘটনাটি রাত ৮টার দিকে তিলোত্তমা সিকদার নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে সাংবাদিক জাহিদুর রহমান এটি রাত ১১টার দিকে শেয়ার করলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ভিডিও ও বিবরণ ছড়িয়ে পড়তেই বিভিন্ন মহল থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হয়।

পটুয়াখালী জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযোগটি তারা গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করেছে এবং তদন্ত চলছে। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তদের কেউই আটক হয়নি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, “রাজনৈতিক মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে হুমকির মুখে ফেলা হচ্ছে। আমরা প্রশাসনের কাছে দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

মানবাধিকার সংগঠনগুলোও এ ঘটনার দ্রুত বিচার দাবি করেছে। তারা বলছেন, এটি শুধু একজন ছাত্রীর উপর হামলা নয়, বরং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর সরাসরি আঘাত।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজনৈতিক পরিবেশে সহনশীলতার অভাব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধীরগতি এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তিকে উৎসাহিত করছে।

উল্লেখ্য, এ ধরনের ঘটনা দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার ঘটেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্যের কারণে নারী ও তরুণদের লক্ষ্যবস্তু বানানো একটি উদ্বেগজনক প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন কতটা দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করে