ভিপি নুরকে লক্ষ্য করে গলাচিপায় হামলা: রাজপথের লড়াই কি গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ছে?

নবজাগরণ ডেস্ক : ১৩ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের রাজপথে একসময় যিনি ছিলেন সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তরুণদের প্রতিচ্ছবি—ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর-আজ তাকেই তাঁর নিজ গ্রাম পটুয়াখালীর গলাচিপায় বিএনপি ও গণঅধিকার পরিষদের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের মুখোমুখি হতে হলো।
এই ঘটনায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে চরবিশ্বাস বাজারে, যেখানে গণঅধিকার পরিষদের একটি কর্মিসভা ছিল পূর্ব নির্ধারিত। সভা চলাকালেই হঠাৎ করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, অভিযোগ উঠেছে-স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা সভাস্থলে এসে আপত্তিকর স্লোগান ও হামলা চালায়। পাল্টা প্রতিরোধ করে গণঅধিকার কর্মীরাও, এতে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো বাজার এলাকা।

‍ ভিপি নুর: রাজপথের লড়াকু সেনানী, গ্রামেও কি একা?

নুরুল হক নুর যখন ঢাকার রাজপথে গর্জে উঠতেন, তখন অনেকেই তাকে দেখেছেন ভবিষ্যতের একজন ‘সংস্কারবাদী রাষ্ট্রনায়ক’ হিসেবে। ছাত্র-জনতার কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম নেতা, সংবিধান সংস্কার, রাষ্ট্র কাঠামো বদলের স্বপ্ন এবং জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় তাঁর সাহসী উচ্চারণ আজও সামাজিক মাধ্যমে আলোচিত।

কিন্তু সেই নুরকেই আজ তাঁর নিজ অঞ্চলে আক্রমণের মুখে পড়তে হলো-এবং সেটা বিএনপির নেতাকর্মীদের হাতে!
প্রশ্ন উঠছে-একই লক্ষ্যে পথে নেমে থাকা দুই বিরোধী দলের মধ্যে বিভাজন কেন এত তীব্র?

কারা চাইছে বিরোধী শক্তিকে ভাগ করে রাখতে?

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্য গড়ে তোলার যে আহ্বান নুরুল হক নুর দিয়ে আসছেন, তা মূলধারার বিরোধী দল বিএনপির অংশ বিশেষ গ্রহণ করতে পারছে না।
গণঅধিকার পরিষদকে অনেকেই বিএনপির ‘বিকল্প’ শক্তি হিসেবে দেখেন, যা তাদের রাজনৈতিক মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে-এই আতঙ্কেই সম্ভবত এমন হামলা।

এই হামলার ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, বাংলাদেশে ‘ঐক্যের’ কথা যত বলা হোক, বাস্তবে রাজনৈতিক স্বার্থ ও আধিপত্যই মুখ্য হয়ে উঠেছে।

এই ঘটনায় যেসব প্রশ্ন সামনে এসেছে:

১. ভিপি নুরের বিরুদ্ধে হামলা কি পূর্বপরিকল্পিত ছিল?

২. বিরোধী শক্তির ঐক্য আদৌ সম্ভব? নাকি ভেতরেই চলছে ক্ষমতার লড়াই?

৩. একদল তরুণকে নেতৃত্ব দেওয়া নুরুল হক নুর কি এবার গ্রামীণ রাজনীতিতেও হুমকি হয়ে উঠছেন?

৪. এমন অবস্থায় জনতার বিকল্প শক্তি গড়ার লড়াই কতটা দুরূহ হয়ে উঠছে?

ভিপি নুরুল হক নুর জাগ্রত জনতার নেতা:ভিপি নুরের ওপর হামলা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের নগ্ন চিত্র তুলে ধরেছে। এখানে শুধু সরকার নয়, বিরোধী দলগুলোর মধ্যেও যে সহিংসতা, প্রতিহিংসা আর নেতৃত্বের লড়াই চলছে, তা আবারও প্রমাণ হলো।

দেশ যখন এক জুলুমতন্ত্রের চক্রে বন্দী, তখন প্রয়োজন সব রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে ন্যূনতম সহাবস্থান এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভিন্নমতের প্রতি সহিষ্ণুতা।
অন্যথায়, ক্ষমতাধর গোষ্ঠী উপহাস করবে আমাদের দুর্বলতার ওপর, আর জনগণ হারাবে নতুন নেতৃত্বের প্রতি আস্থা।

শেয়ার করুন, মতামত দিন। আপনি কি মনে করেন-গণঅধিকার পরিষদ ও বিএনপি একসঙ্গে কাজ করতে পারবে? নাকি ভবিষ্যতেও ঘটবে এমন বিভাজন?