ইরানের হৃদয়ে মোসাদ -ড্রোন কারখানা ও মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ যুদ্ধ

নবজাগরণ ডেস্ক ১৬ জুন ২০২৫
ভূগর্ভস্থ ষড়যন্ত্র: রাজধানীর গায়ে ছুরিকাঘাত!
ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান এক চাঞ্চল্যকর অভিযানে রাজধানী তেহরানের নিকটবর্তী একটি ভূগর্ভস্থ ইসরায়েলি ড্রোন কারখানা আবিষ্কার করেছে। কারখানাটির পেছনে সক্রিয় ছিল মোসাদ, ইসরায়েলের ber feared গুপ্তচর সংস্থা, এবং এতে অংশ নিয়েছিল বেশ কয়েকজন ইহুদি এজেন্ট। এদের অনেকেই ছদ্মবেশে তেহরানের অভিজাত এলাকায় বসবাস করছিল।

এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং এটি মধ্যপ্রাচ্যে চলমান প্রক্সি ও ছায়াযুদ্ধের সবচেয়ে সাহসী অধ্যায়।

কারখানাটি কী ছিল?

তথ্য অনুসারে, এই কারখানায় উৎপাদন হচ্ছিল ক্ষুদ্র কিন্তু অত্যাধুনিক “সুইসাইড ড্রোন”, যা লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করে সরাসরি হামলা চালাতে পারে। এদের টার্গেট ছিল-

ইরানের সামরিক ঘাঁটি
পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্র
সাইবার নিরাপত্তা অবকাঠামো
উচ্চপদস্থ বিপ্লবী গার্ড সদস্যরা

এই প্রকল্পটির লক্ষ্য ছিল ইরানের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তাকে ভিতর থেকে ভাঙা।

মোসাদের ছায়া অভিযান: কেন ইরান?

ইসরায়েল জানে, সরাসরি যুদ্ধ ইরানের সঙ্গে সম্ভব নয়। তাই তারা বেছে নিয়েছে গুপ্তচর, সাইবার হামলা ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের পথ। তেহরানের ভিতরে ড্রোন কারখানা স্থাপন সেই আক্রমণের নতুন স্তর।

এর আগেও মোসাদ ইরানের পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের হত্যায় অভিযুক্ত হয়েছে। এবার তারা দেশের ভেতরে নাশকতার কারখানা গড়ে তুলে মধ্যপ্রাচ্যে এক নতুন ধ্বংসযজ্ঞের সূচনা করতে চেয়েছিল।

প্রতিরোধ গড়ে তুলছে ইরান

ইরানের প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এই ষড়যন্ত্র সঠিক সময়ে উদঘাটন করতে পারায় মধ্যপ্রাচ্য নতুন এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধ থেকে বেঁচে গেছে। ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, উদ্ধার হওয়া ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ, সার্ভার এবং একাধিক স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক।

ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন,

“ইহুদিবাদী ইসরায়েলের ঘৃণ্য পরিকল্পনা রক্তাক্ত পরিণতির আগেই থামানো হয়েছে। এখন আমরা হামলাকারীদের দমন করব ভিতর ও বাহির থেকে।”

বৃহৎ প্রেক্ষাপটে: যুদ্ধ আর কূটনীতি

এই ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠে-
মধ্যপ্রাচ্যে কি এবার চূড়ান্ত পর্বে প্রবেশ করছে প্রযুক্তিগত ও ছায়া যুদ্ধ?
যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, ব্রিটেন এ ঘটনায় এখনো নিরব। অথচ তাদের অনেক গোপন সংস্থাও এই অঞ্চলে সক্রিয়।

একই সময়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যা, লেবাননে আগ্রাসন, এবং সিরিয়ায় বোমাবর্ষণ প্রমাণ করে: ইসরায়েল এখন গোটা অঞ্চলকে অস্থির করে তুলতে চাইছে।

পরিণতি ও শেষ কথা

ইরানে গোপন ড্রোন কারখানার আবিষ্কার এই সত্যকে আবারও সামনে নিয়ে এসেছে-
বিপ্লবী চেতনা ও প্রযুক্তিগত প্রতিরোধের যুগ শুরু হয়েছে।
যত দিন প্রতিরোধ থাকবে, তত দিন এই যুদ্ধ চলবে মানসিক, তথ্য ও অস্ত্রের স্তরে।

এখন প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ, রাজনৈতিক সাহস এবং প্রযুক্তি-ভিত্তিক প্রতিশোধ।
এই যুদ্ধে নিরপেক্ষ থাকার সুযোগ নেই।

আপনার মতামত দিন:
ইরানে গোপন ইসরায়েলি ড্রোন কারখানার আবিষ্কার নিয়ে আপনার বিশ্লেষণ কী?