বিশেষ প্রতিনিধি : পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়নের জনতার চেয়ারম্যান হিসাবে খ্যাত গাজী মিজানুর রহমান বলেছেন, এ ইউনিয়নে সন্ত্রাসী এবং মাদক ব্যবসায়ীদের কোনো স্থান হবে না। এলাকার জনসাধারণকে সাথে নিয়ে তাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে আমার অবস্থান জিরো টলারেন্স। গত ১২ জুন বিকালে ইউনিয়নের রাজবাড়ী বাজারে এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে গাজী মিজানুর রহমানের আহ্বানে এক জরুরী সভার আয়োজন করা হয়।
সম্প্রতি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। ঈদুল আজহা পূর্ব ও পরবর্তী সময়ে এসব ঘটনা ঘটে। এসকল বিষয়ে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। যাহা ইউনিয়নের ভাবমূর্তিকে খর্ব করেছে। আমরা একটু ধৈর্যশীল হলেই এসকল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা খুব সহজেই এড়ানো যেত। তিনি বলেন, গত বছরের ০৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সময় হতে দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি ঘটেছে তা এখনো স্বাভাবিক হয় নি। তার কিছুটা ছোঁয়া আমাদের ইউনিয়নেও লেগেছে। রাজনীতিতেও বিরাজ করছে অস্থীরতা। তৃণমূল নেতাকর্মীদের উপর স্হানীয় নেতৃবৃন্দের নেই কোনো নিয়ন্ত্রণ। ফলে রাজনীতির নামে একটি শ্রেণি হয়ে উঠছে বেপরোয়া।
তিনি বলেন, এলাকার একটি পরাজিত শক্তি বিভিন্ন ভাবে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নের কাজে ইন্ধন যোগাচ্ছে। তাদের ফাঁদে পা দিয়ে এলাকার যুব শ্রেনী বিপথগামী হচ্ছে। এরা সকলেই আপনার আমার সন্তান। ইতিমধ্যে এলাকার নোংরা রাজনীতি ও আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ের প্রতিযোগিতায় অনেকে হামলা পাল্টা হামলার শিকার হয়েছে। অনেককে মামলার আসামী হয়ে কারাগারেও যেতে হয়েছে। আমাদের একটা বিষয় হিসাব রাখতে হবে যারা পিছন থেকে খেলছে তাদের কারো সন্তান মারামারিতে অংশ নেয় না এবং মামলার আসামী হয় না। আমাদের সন্তানদের অতি উৎসাহী আচরণে আমাদেরই টাকা হাসপাতাল, থানা পুলিশ ও আদালতে খরচ হয়। এ বিষয়টি অভিভাবক হিসাবে আমাদের সন্তানদের বোঝাতে হবে। তিনি বলেন, কথায় কথায় মামলা কোনো সমাধান নয়। এতে দীর্ঘস্হায়ী শক্রতার সৃষ্টি হয়। তাই এলাকার সমস্যা এলাকায় সমাধান করার চেষ্টা করবেন।
যারা আমাদের এলাকায় মাদক ব্যবসা ও সেবনের সাথে জড়িত তারা সকলেই কারো না কারো কাছের লোক। অতএব এদেরকে নসিহত করে খারাপ পথ থেকে ফিরিয়ে আনা আমাদের দায়িত্ব। অন্যথায় সমাজ ও পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। আপনারা এদেরকে প্রতিহত করতে না পারলে পুলিশকে অবহিত করুন। আমাকে জানান। সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীরা কারো আপন নয়। এদের বিষয়ে আমার অবস্থান জিরো টলারেন্স। এদেরকে প্রতিহত করতে আমি আপনাদের সাথে আছি এবং থাকব।
তিনি বলেন আমাদের এলাকার সমাজ বিরোধী একটা চক্রের হাত ধরে বিভিন্ন পরিচয়ে কিছু বহিরাগত এলাকায় প্রবেশ করে বিভিন্ন নৈরাজ্য সৃষ্টি করে আসছিল। সম্প্রতি সাংবাদিক নামধারী এক বাটপার চাঁদকাঠী বাজারে ইট চুরি করতে এসে জনতার হাতে আটক হয়। আমি চাঁদকাঠী এলাকার জনগণকে ধন্যবাদ জানাই তাদের সাহসীকতার জন্য। তারা একটি দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছে। কেউ এসে হুমকি ধমকি দিলে ভয় পাবেন না। সঠিক পরিচয় নিশ্চিত হউন। সন্দেহ হলে তাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করুন। কখনো আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না।
গাজী মিজানুর রহমান ঈদুল আজহার পর থেকে এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি ঘুরে দেখেন। সর্ব স্তরের জনসাধারণের সাথে মত বিনিময় করেন। ইউনিয়নবাসীর বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন এবং সমাধানের আশ্বাস দেন। তিনি এলাকাবাসীকে নিজ নিজ নিরাপত্তা বিধান করার জন্য আহ্বান জানান। তিনি সকলকে অপ্রয়োজনীয় আড্ডা পরিহার করতে বলেন। নিজ সন্তানদের সন্ধার পরে বাড়ির বাহিরে থাকাকে নিরুৎসাহিত করতে বলেন। তিনি বলেন আমি আপনাদের সেবক, শাসক নই।সকলের সহযোগিতা নিয়ে গুয়ারেখা ইউনিয়নকে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত একটি সু-শৃঙ্খল জনপদ হিসাবে গড়ে তুলতে চাই।