ভারত-বিশ্বব্যাপী মুসলিমবিদ্বেষ রপ্তানির কেন্দ্রস্থল

নবজাগরণ ডেস্ক-মো:আবু তাহের পাটোয়ারী:
“হিটলার ছিলো একক, মোদি হলেন সংগঠিত হিটলারতন্ত্রের প্রতীক। বিজেপি সরকার আজ হিন্দুস্তানকে পরিণত করেছে বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণার ফ্যাক্টরিতে।”

ভারত আজ আর একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়, এটি এখন একটি রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ ও মুসলিমবিদ্বেষের চরম আদর্শে বিশ্বাসী ফ্যাসিবাদী তন্ত্রের নাম। ভারতীয় হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার ও আরএসএস-ইসকন-RAW নামক ত্রিমুখী সন্ত্রাসী মডেল আজ বিশ্বব্যাপী মুসলিম জনগোষ্ঠীর অস্তিত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

১. মুসলিমবিদ্বেষ ভারতের রাষ্ট্রীয় নীতি -আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

যুক্তরাষ্ট্রের ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশনের (USCIRF) ২০২৩ সালের রিপোর্টে ভারতকে “Country of Particular Concern” বা চরম উদ্বেগজনক রাষ্ট্র হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।

পিউ রিসার্চ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলছে: ২০১৪ সাল থেকে ভারতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৮৭%।

২০২৪ সালে নিউইয়র্ক টাইমস বলছে: “India’s democratic decline is matched only by its growing religious intolerance, and Muslims are the primary victims.”

🧨 ২. RAW: গোয়েন্দা নয়, এখন রাষ্ট্রীয় হত্যাযন্ত্র

ভারতীয় RAW শুধু তথ্য সংগ্রহকারী সংস্থা নয়, এটি এখন গোপন হত্যাকাণ্ড ও আন্তর্জাতিক গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধী শক্তি।

🇨🇦 কানাডা: প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো নিজে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করেন-শিখ নেতা হরদীপ সিং নাজার হত্যাকাণ্ডে ভারতের RAW সরাসরি জড়িত।

🇮🇷 ইরান: দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ভারতীয় গোয়েন্দা তৎপরতার জাল ফাঁস করেছে।

🇧🇩 বাংলাদেশ: ২০১৫ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ৬০০+ রাজনৈতিক গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা হয়েছে যার পেছনে ভারতীয় গোয়েন্দা তত্ত্বাবধান বারবার উঠে এসেছে।

৩. ইসকন: ধর্মীয় সংগঠন না রাষ্ট্রীয় প্রোপ্যাগান্ডার মুখোশ?

ইসকন এখন ভারত সরকারের সাংস্কৃতিক এজেন্ডার মুখপাত্র। তারা বাংলাদেশের মতো মুসলিম দেশে ‘ভক্তি আন্দোলন’ ছড়ানোর নামে ধর্মান্তর, সামাজিক বিভক্তি ও হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার দোসর।

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের পক্ষে প্রকাশ্যে ‘ইসকন’ কর্মীদের অবস্থান দেখা গেছে।

মধ্যপ্রাচ্যে ইসকনের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিম বিভাজনকে প্রবাসীদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় কোটি কোটি রুপি বিনিয়োগ হচ্ছে।

৪. মিডিয়া: ভারতীয় গুজব সাম্রাজ্য

টাইমস নাও, রিপাবলিক টিভি, অপিন ইন্ডিয়া, জি নিউজ-এসব চ্যানেল সারা পৃথিবীতে মিথ্যাচারের উৎস হয়ে উঠেছে।

BBC এবং Reporters Without Borders বারবার ভারতকে “মিডিয়া রিগ্রেশন”-এর উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

মুসলমানদের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো, ফেক নিউজের মাধ্যমে ঘৃণা ছড়ানো এবং প্রবাসে থাকা ভারতীয়দের দিয়ে ইসলামবিদ্বেষী ক্যাম্পেইন ছড়ানো—এসব এখন ওপেন সিক্রেট।

৫. ভারতীয় নাগরিক ও প্রবাসী এজেন্ট: মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ‘টাইম বম্ব’

প্রবাসে থাকা লক্ষ লক্ষ ভারতীয়, বিশেষত গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ ও বিহার থেকে আগত হিন্দুত্ববাদী শ্রমিকরা মধ্যপ্রাচ্যে এখন আর কেবল শ্রমিক নয়-তারা হয়ে উঠেছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো, মোদি প্রচার ও RSS আদর্শ প্রচারের হোতা।

সমাধান ও প্রস্তাবনা:
১. আরব লিগ ও ওআইসি-কে একযোগে ভারতের মুসলিমবিদ্বেষের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অবরোধ ও কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানাতে হবে।
২. ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে যারা প্রমাণিতভাবে হিন্দুত্ববাদী প্রোপ্যাগান্ডায় যুক্ত।
৩. মুসলিম বিশ্বে একটি “মুসলিম তথ্য ও সংবাদ জোট” গঠন করে ভারতের প্রোপ্যাগান্ডার জবাব দিতে হবে আন্তর্জালিকভাবে।
৪. বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার দোসর দালাল, মিডিয়া চর এবং তথাকথিত ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম’-এর মুখোশধারীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
৫. মুসলিম বিশ্বকে এবার ভারতকে “state sponsor of religious hatred” ঘোষণা করার জন্য জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব উত্থাপন করতে হবে।

সমাপ্তি নয়, শুরু:
ভারত এখন মুসলিম বিশ্বকে হুমকি দিচ্ছে শুধু রাজনৈতিকভাবে নয়-ধর্মীয়ভাবে, সামাজিকভাবে এবং সাংস্কৃতিকভাবে। মুসলমান জাতির ইতিহাস বলে, আমরা কখনও মাথা নিচু করিনি। এখন আর চুপ করে থাকা চলে না।মন-মগজে ধারণ করতে হবে লেখাটির বিষয়গুলো।

প্রিয় পাঠক ও দর্শক, আপনি কী বলবেন? এখনই কি সময় নয় ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্বমুসলিমের সম্মিলিত অবস্থান নেওয়ার? সবাই শেয়ার করুন-
আরো জানতে চাইলে পড়ুন :
www.thenabajagaran.com