ফিলিস্তিনের বিজয়ের হাসি: মুসলিম জাতির এক ঐতিহাসিক উত্থান

নবজাগরণ ডেস্ক:
ইতিহাসের চাকা ঘুরেছে। যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে দখল, নির্যাতন ও উপনিবেশবাদের শিকার হয়ে এসেছে, তারাই আজ তাদের পবিত্র ভূমিতে বিজয়ের পতাকা উড়াচ্ছে। আমরা সেই সময়ের সাক্ষী-যখন ফিলিস্তিনের সাধারণ জনগণ, পাথর আর ইমানের শক্তি নিয়ে, ইসরায়েলের ট্যাংক ও যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করছে। আজ দখলদার নয়, প্রতিরোধকারী হাসছে। এই হাসি শুধু ফিলিস্তিনের নয়, এই বিজয় পুরো মুসলিম উম্মাহর, এই দিন আমাদের বিজয় দিবস!

দখলদারিত্বের যুগশেষ?

১৯৪৮ সাল থেকে শুরু হওয়া দখলদার ইসরায়েলি রাষ্ট্রযন্ত্র, সশস্ত্র সহিংসতা ও পাশ্চাত্য প্রভুদের সহায়তায় জবরদখল করেছিল যে ভূমি-আজ সেই ভূমি আবার ফিরছে প্রকৃত মালিকের হাতে। পশ্চিম তীর, গাজা, পূর্ব জেরুজালেমসহ বহু এলাকা ইসরায়েলি ফৌজের হাত থেকে একে একে মুক্ত হচ্ছে।

ইসরায়েলি সেনা ঘাঁটি পুড়ছে, বসতি উচ্ছেদ হচ্ছে, হাজার হাজার সৈন্য আত্মসমর্পণ করছে। প্রতিরোধের শক্তি আজ এমন উচ্চতায়, যা দখলদার রাষ্ট্রটির রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভিত্তি নাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি পশ্চিমা গণমাধ্যমও আর সত্যকে ঢাকতে পারছে না।

প্রতিরোধের প্রতিচ্ছবি: ইমান, ঐক্য ও আত্মত্যাগ

হামাস, ইসলামিক জিহাদ কিংবা অন্যান্য দল নয়-এই বিজয়ের নায়ক গোটা ফিলিস্তিনি জনগণ। তারা ৭৭ বছর ধরে রক্ত দিয়ে, ঘর হারিয়ে, সন্তান কবর দিয়ে এ বিজয়ের বীজ বপন করেছে। আজ সেই বীজ থেকে ফুঁটে উঠেছে স্বাধীনতার ফুল।

মুসলিম বিশ্ব বহু বছর ধরে নিরব, নিঃসহায় দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। মিসর, ইয়েমেন, লেবানন, ইরাক, এমনকি তুরস্কের জনগণ এখন সরব। তারা রাস্তায় নেমেছে, পতাকা হাতে নিয়েছে, গর্জে উঠেছে। এই বিজয় রাজনৈতিক নেতৃত্ব নয়, জনগণের বিজয়-ঐক্যের বিজয়।

কেন এই বিজয় ইতিহাসে অনন্য?

এই বিজয় পাথর দিয়ে শুরু হয়ে রকেট দিয়ে শেষ হয়নি। এটি ইমান দিয়ে শুরু হয়েছে, বিপ্লবের আগুন দিয়ে টিকে আছে, এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী বৈশ্বিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছে। এ বিজয়:

পাশ্চাত্য মিডিয়ার প্রপাগান্ডাকে পরাজিত করেছে
ইসরায়েলি “অজেয়” ভাবমূর্তিকে ধুলোয় মিশিয়েছে

মুসলিম বিশ্বের একক আত্মপরিচয়ের ঘুম ভেঙেছে
নতুন প্রজন্মের মাঝে মুক্তির তৃষ্ণা জাগিয়েছে

আমাদের করণীয়: শুধু উল্লাস নয়, প্রস্তুতির আহ্বান

এই বিজয় শুধু ফিলিস্তিনের জন্য নয়, আমাদের জন্যও একটি সুযোগ। বাংলাদেশসহ প্রতিটি মুসলিম দেশে এই জাগরণ ছড়িয়ে দিতে হবে। আমাদের শিশুদের শেখাতে হবে, কে বন্ধু, কে শত্রু। আমাদের মিডিয়া, শিক্ষাব্যবস্থা, সংস্কৃতি-সব কিছুতে একটি প্রতিরোধ ও আত্মমর্যাদার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।

আজকের এই বিজয় আমাদের প্রেরণা দিক, যেন আমরা আমাদের নিজ নিজ রাষ্ট্রেও গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও মানবমর্যাদার জন্য লড়াই করতে পারি। কারণ, দখলদার শুধু বাইরের নয়, ভেতরেরও আছে।

ফিলিস্তিনের বিজয়, আমাদের আত্মার মুক্তি। এই বিজয়ের হাসিতে লুকিয়ে আছে ভবিষ্যতের ইতিহাস। এই হাসি যেন দীর্ঘস্থায়ী হয়, এই আশাই হোক আমাদের সংকল্প।

নবজাগরণ এর পক্ষ থেকে এই দিনটিকে আমরা “মুসলিম বিজয় দিবস” হিসেবে অভিহিত করছি। আজ থেকে আমরা শুধু প্রতিবাদ করব না, প্রস্তুতি নেবো। ইনশাআল্লাহ।
সবাই শেয়ার করুন মহাখুশির সংবাদটি।

#FreePalestine #MuslimVictoryDay #নবজাগরণ #Revolution #VictoryOfFaith #EndOfZionism