নবজাগরণ রিপোর্ট:
আজ ১৭ জুলাই ২০২৫, রাজবাড়ী জেলা শহরের কেন্দ্রস্থল রাজবাড়ী ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হলো জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)বিশাল জনসভা।
এই সমাবেশ ছিল শুধু একটি রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, বরং ছিল একটি গণজোয়ার-একটি প্রতিবাদ,একটি স্বপ্ন এবং একটি নবজাগরণের ঘোষণা।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ও তাঁদের বার্তা
এই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন এনপিপির কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, যিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন:
“আজ রাজবাড়ী প্রমাণ করেছে-ভয় নয়,আশা দিয়ে রাজনীতি হতে পারে। আমরা শাসন নয়,সেবা দিতে চাই।”
বিশাল জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন:
আরিফুর রহমান তুহিন,যুগ্মআহ্বায়ক আসিফ হোসেন ফাহিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সারজিস হোসেন,যুবনেতা
শবনম তাসনিম,নারী ও সামাজিক অধিকারবিষয়ক আহ্বায়ক
ইমরানুল হক মিশু, ছাত্রনেতা সুলতান মাহমুদ সাব্বির,তথ্য ও প্রচার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত রওনক আরা লিপি,সাংস্কৃতিক সংগঠক রাজবাড়ীর জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ!
সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়ন থেকে দলে দলে মানুষ আসতে শুরু করে। কৃষক,শ্রমিক,নারী, তরুণ,ছাত্র-সবার অংশগ্রহণে সমাবেশটি এক বিশাল গণজোয়ারে পরিণত হয়। স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,বিগত এক দশকে রাজবাড়ীতে এতবড় বিকল্প রাজনৈতিক জনসমাবেশ আর দেখা যায়নি।
বক্তৃতার মূল সুর: রাষ্ট্র সংস্কার ও গণতান্ত্রিক উত্তরণ
নাহিদ ইসলাম ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ তাঁদের বক্তব্যে যে ৫টি মূল দাবি তুলে ধরেন,তা হলো:
১. রাষ্ট্র ও সংবিধানের মৌলিক সংস্কার
২. দুর্নীতিমুক্ত গণপ্রশাসন গঠন
৩. রাজনৈতিক চাঁদাবাজি, দলবাজি ও দখলদারিত্বের অবসান
৪. স্বাধীনতা-উত্তর শহীদ ও নির্যাতিত পরিবারগুলোর জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষতিপূরণ
৫. শিক্ষাচিকিৎসা ও নিরাপত্তা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিশ্চিতকরণ
গণসংগীত,কবিতা ও নাট্যাংশ:সংস্কৃতি দিয়ে প্রতিরোধ
সমাবেশে ছিল মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। রাজবাড়ীর স্থানীয় গণসংগীত শিল্পীরা পরিবেশন করেন “এই দেশ আমার রক্তে গড়া”,“তোমার নাম আমার হৃদয়ে লিখা আছে”—এমন বিপ্লবী সংগীত।
তরুণ নাট্যদল ‘প্রতিবর্তন’উপস্থাপন করে একটি নাট্যাংশ যেখানে শোষণ,দুঃশাসন ও গুমের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে এক তরুণ জনগণকে জাগিয়ে তোলে।
কেন রাজবাড়ী গুরুত্বপূর্ণ?
রাজবাড়ী দীর্ঘদিন ধরে ছিল মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ‘নিরাপদ ঘাঁটি’।কিন্তু এই সমাবেশ দেখিয়ে দিল,মানুষ পরিবর্তন চায়।
রাজবাড়ী এখন আর ক্ষমতাসীনদের‘দুর্নীতির দুর্গ’নয়-এটি হয়ে উঠছে নতুন বাংলাদেশের পরীক্ষাগার।
রাজবাড়ী হয়ে উঠলো নতুন গণতন্ত্রের সূতিকাগার?
রাজবাড়ীর মানুষ আজ দেখিয়েছে-গণতন্ত্রের আশা এখনো মরে যায়নি। তারা দেখিয়েছে-রাজনীতি আবারও জনগণের হতে পারে,যদি নেতৃত্ব আসে হৃদয় দিয়ে,যদি রাজনীতি হয় সেবার শপথে।
নাহিদ ইসলামের কথায়-
“আমরা এসেছি ভালোবাসা নিয়ে, আর ফিরে যাবো কৃতজ্ঞতা নিয়ে। এই ভালোবাসাই একদিন রাষ্ট্র বদলাবে, ইতিহাস গড়বে।”