❝মীরজাফরদের নয়, জনগণের সনদ চাই!❞
তারা চাচার খোলা চিঠি, জুলাই যোদ্ধাদের পক্ষ থেকে:
১৭৫৭ সালে পলাশীর প্রান্তরে সিরাজউদ্দৌলা ১০ হাজার অশ্বারোহী এবং ৩০ হাজার পদাতিক বাহিনী নিয়েও মাত্র ৩ হাজার ব্রিটিশ সেনার কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। কারণ? মীরজাফরদের বিশ্বাসঘাতকতা।
২০২৪ সালের বিপ্লব যেন সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি না হয়। এইবার যেন নতুন কোনো মীরজাফর আমাদের আশা, আত্মত্যাগ আর রক্তে গড়া স্বপ্নকে বিক্রি না করতে পারে।
ভারতীয় ষড়যন্ত্রকারীরা লর্ড ক্লাইভদের মতো আমাদের মধ্যে সন্দেহ ছড়াবে, বিভক্ত করবে, টাকা-পদ-পদক দেখিয়ে কিনে ফেলতে চাইবে আমাদের নেতৃত্ব।
তারা জানে, আমরা অতীতে হীনমন্য ও স্বার্থপর ছিলাম।
কিন্তু এবার সময় এসেছে প্রমাণ করার:
আমরা পরাজিত হব না- আমরা ইতিহাস তৈরি করব।
❝জুলাই সনদ❞ নয়, আমরা চাই ❝জুলাই ঘোষণা❞!
দীর্ঘ লড়াই, হাজারো ত্যাগ, রক্তাক্ত বিদ্রোহের পর, জাতি যখন একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোর স্বপ্ন নিয়ে “জুলাই সনদ”-এর অপেক্ষায় ছিল, তখন হাতে তুলে দেওয়া হলো একটি বিকৃত কাগজপত্র-একটি কৌশলী চুক্তি, যেখানে জনগণের ভাষা নেই, শহীদদের ছবি নেই, বৈপ্লবিক আত্মত্যাগের স্বীকৃতি নেই। এটা জনগণের নয়, NGO-মার্কা চুল-চাটুকারদের বানানো চুলের সনদ।
আমরা,জুলাই যোদ্ধারা,এই তথাকথিত সনদকে ঘৃণা করি, প্রত্যাখ্যান করি,কারণ-
“বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন”-আমাদের সত্যিকারের পরিচয়-সেখানে বিকৃত করা হয়েছে।
২০১৮-র কোটা সংস্কার, নিরাপদ সড়ক, মোদিবিরোধী গণপ্রতিরোধ-সব বর্জিত।
শহীদদের নাম-ছবি-আত্মত্যাগ নেই।
লুটেরা নেতা, ভারতীয় দালাল, প্রশাসনের গুলির নির্দেশদাতা-কেউ দায়ী নয়।
পিলখানা, শাপলা চত্বর, ২০২১-র গণহত্যা-সব মুছে দেওয়া হয়েছে।
এটা কি সেই সনদ, যা আমরা রক্ত দিয়ে লিখেছিলাম?
না,এটা কাপুরুষের দলিল। জনগণের আত্মসম্মান নিয়ে তামাশা।
তাই জুলাই যোদ্ধাদের দাবি: “জুলাই সনদ” নয়, চাই “জুলাই ঘোষণা”!
এই ঘোষণাপত্র হবে একটি নতুন বাংলাদেশের স্বাধীনতা সনদ-একটি মুক্তির ম্যাপ, যেখানে জনগণের ভাষা, রক্ত, স্বপ্ন ও ঐতিহাসিক আত্মত্যাগের প্রতিফলন থাকবে।
“জুলাই ঘোষণা”র ৫টি মৌলিক রূপরেখা:
১.গণতান্ত্রিক পুনর্গঠন
এককেন্দ্রিক প্রধানমন্ত্রিত্ব বাতিল করে দ্বিকেন্দ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা (প্রেসিডেন্ট + প্রধানমন্ত্রী)।
উচ্চকক্ষসহ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ।
এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন—এটা সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা।
২. বৈষম্যহীন বাংলাদেশ
গ্রাম-শহরের বৈষম্যহীন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরি, আইন।
কোটানির্ভর নয়, সুযোগনির্ভর সমতা-সংবিধানে সুনির্দিষ্ট বিধান।
৩. শহীদদের স্বীকৃতি
২০২৪ সালের শহীদ ও আহতদের সরকারি স্বীকৃতি ও রাষ্ট্রীয় স্মৃতি সৌধ।
প্রতি বছর “বৈষম্যবিরোধী সংগ্রাম দিবস” পালন।
৪. বিশ্বাসঘাতকদের বিচারের কমিশন
পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর, গুম-খুন, মোদিবিরোধী গণহত্যা-সব তদন্তে সত্য ও দায়বদ্ধতা কমিশন গঠন।
৫.ভারতীয় আধিপত্য ও দালাল রাজনীতি প্রতিরোধ
রাষ্ট্রবিরোধী চুক্তি বাতিল।
নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন।
“জুলাই ঘোষণা” হবে লাল-সবুজ পতাকার নতুন ব্যাখ্যা
যেমন ১৯৭১ ছিল একটি মুক্তিযুদ্ধ, তেমনি ২০২৪ সালের জুলাই ছিল দ্বিতীয় রূপান্তরযুদ্ধ।
এই যুদ্ধের ভাষা, ইতিহাস, স্বপ্ন কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। এইবার আমরা সংবিধান পুনর্লিখব জনগণের ভাষায়।
জুলাই যোদ্ধারা শপথ নিচ্ছি:
শহীদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না
দালালদের সনদ নয়, জনতার ঘোষণা হবে
সংবিধান হবে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা
তরুণদের প্রতি আহ্বান:
যারা মনে করেন এই দেশ শুধু ধনীদের, প্রভাবশালীদের নয়-তাদের জন্য এই “জুলাই ঘোষণা”।
যারা চান বৈষম্যহীন, মর্যাদাপূর্ণ, ন্যায়ের গণতন্ত্র-তাদের জন্য এই রূপরেখা।
শেয়ার করুন আলোচনা শুরু করুন তরঙ্গ তৈরি করুন
এই ঘোষণাপত্র ছড়িয়ে দিন, বন্ধুদের জানান, প্রতিটি পাড়ায়, গলিতে, ভার্সিটিতে, কারখানায়, পাঠশালায়-
গণআলোচনার উত্তাল তরঙ্গ তুলুন!
তোমরা ইতিহাসের নতুন লেখক।
এই “জুলাই ঘোষণা”হবে ২০২৫ সালের মুক্তিসনদ।