সত্য প্রকাশের যুদ্ধে কলম কখনো থামে না

মো:আবু তাহের পাটোয়ারী:
সাংবাদিকের কলার ধরা মানে জনগণের কণ্ঠরোধ
ঢাকার বুকে চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা-ডিসির সামনেই এক সাংবাদিককে কলার ধরে হাজতে ঢুকিয়ে দিলেন ওসি। এর কিছুক্ষণ পরই পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ এমন মন্তব্য করলেন,যা কেবল সাংবাদিক সমাজকেই নয়,বরং গোটা জনগণকেই অপমান করেছে।

এ ঘটনা স্পষ্ট প্রমাণ করে,ক্ষমতার আস্ফালনে এখনো জনগণের মৌলিক অধিকারকে রুদ্ধ করার চেষ্টা চলছে।
সাংবাদিকতার কাজ কী?
সাংবাদিকরা কেবল খবর লেখেন না। তাঁদের কাজ হলো-
দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি উন্মোচন,ক্ষমতাসীনদের জবাবদিহির আওতায় আনা,জনগণের অধিকার রক্ষা করা।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদের ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদ বলছে:
“তথ্য জানার অধিকার প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার।”
সাংবাদিকরা সেই অধিকার বাস্তবায়নের প্রধান হাতিয়ার।
কমিশনার সাহেবের বক্তব্য:দায়িত্বহীন না কি ক্ষমতার অহংকার? কমিশনার হাসিব আজিজ মন্তব্য করেছেন-“সাংবাদিকদের অ্যাকসেস সব জায়গায় নয়।”

প্রশ্ন হলো-যদি কোনো অবৈধ কর্মকাণ্ড জনস্বার্থে প্রকাশযোগ্য হয়,সাংবাদিকরা কি তা তুলে ধরতে পারবেন না? ইতিহাস বলে,পারবেন,বরং তাঁদের তা করতেই হবে।
এ বক্তব্য কেবল প্রশাসনিক শালীনতার ঘাটতি নয়,বরং ক্ষমতার দম্ভের প্রকাশ। ইতিহাস কী বলে? ওয়াটারগেট কেলেঙ্কারি (যুক্তরাষ্ট্র)পানামা পেপারস বাংলাদেশের রানা প্লাজা ধস

এসব উদ্ঘাটন হয়েছিল সাংবাদিকদের নির্ভীক অনুসন্ধানে। যদি তাঁরা অনুমতির অপেক্ষায় থাকতেন,এসব সত্য কখনোই প্রকাশ পেত না। আমাদের অবস্থান আমরা মনে করি-
১.কমিশনারকে অবিলম্বে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে।
২.সাংবাদিক সমাজের কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
৩.সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা ওসিকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
কারণ সাংবাদিকদের অপমান মানে জনগণের অধিকারকে অপমান।

সাংবাদিকতার পথচলা শত বছরের,যার শেকড় গণমানুষের রক্তে সঞ্চিত। কিন্তু আপনার পদ,আপনার ক্ষমতা-সময়সীমাবদ্ধ।ক্ষমতার অহংকার নয়,জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা দেখান। নাহলে ইতিহাসই আপনাকে দায়ী করবে।

(কবিতা)
কলমের জোরে সত্য বলে,
মিথ্যার দেয়াল ভেঙে ফেলে।
জনতার চোখ, সাংবাদিকতা-
শৃঙ্খল ভাঙার প্রহরী তা।

কলার ধরে থামাতে চাও?
ইতিহাস কি ভয়ে কাঁপে নাও?
ক্ষমতার মেয়াদ ক্ষণিক সময়,
কিন্তু সত্যের শিখা নিভে না কোনোদিনই।

লেখক:সম্পাদক,নবজাগরণ ও মানবাধিকার নেতা।