নবজাগরণ রিপোর্ট:
ফেনীর দাগনভূঞায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে ১১ হাজার ইয়াবাসহ দুই কুখ্যাত মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এসময় জব্দ করা হয়েছে নগদ ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা, একটি মোটরসাইকেল এবং চারটি মোবাইল ফোন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন-ওমর ফারুক ওরফে বুলেট ফারুক (৪৪), রসুলপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
সাইফুল ইসলাম সুজন (৩৬), কুতুবপুর ইউনিয়নের রমজান আলী বেপারী বাড়ির বাসিন্দা। তাদেরকে বুধবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে দাগনভূঞা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের গোডাউন রোড এলাকা থেকে আটক করা হয়।বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন নোয়াখালী জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সুব্রত সরকার শুভ।
যেভাবে ধরা পড়ল: গত ১৮ সেপ্টেম্বর বেগমগঞ্জ থেকে ৩ হাজার ইয়াবাসহ তালিকাভুক্ত মাদক কারবারি সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে এনডিসি। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, নোয়াখালীর শীর্ষ ইয়াবা সরবরাহকারী বুলেট ফারুক বর্তমানে ফেনীর দাগনভূঞায় অবস্থান করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাহিদ হোসেনের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে বুলেট ফারুককে হাতেনাতে আটক করা হয়। অভিযানে ফারুকের পরিহিত জাঙ্গিয়া ও মোটরসাইকেল থেকে ১০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে তার সহযোগী সুজনের ঘরে অভিযান চালিয়ে আরও ১ হাজার ইয়াবা উদ্ধার হয়।
মামলা ও পটভূমি: আসামি বুলেট ফারুকের বিরুদ্ধে নোয়াখালীর সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও সিএমপির ডবলমুড়িং থানায় ১০টি মাদক মামলা রয়েছে। আর সহযোগী সুজনের বিরুদ্ধে রয়েছে ৭টি মামলা। সহকারী পরিচালক সুব্রত সরকার শুভ জানান, তাদের বিরুদ্ধে উপপরিদর্শক তাজবীর আহাম্মদ বাদী হয়ে দাগনভূঞা থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেছেন। পরবর্তীতে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।
নোয়াখালী-ফেনী অঞ্চল দীর্ঘদিন ধরেই ইয়াবার বড় রুট হিসেবে চিহ্নিত। সীমান্ত ঘেঁষা এলাকা হওয়ায় এই চক্রগুলো সহজে সক্রিয় হতে পেরেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু গ্রেপ্তার নয়, বরং এর পেছনে থাকা মূল অর্থায়নকারী, প্রভাবশালী পৃষ্ঠপোষক এবং আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক ভেঙে ফেলা জরুরি। অন্যথায় এক কারবারি ধরা পড়লেও নতুন চক্র তৈরি হয়ে যাচ্ছে।
১১ হাজার ইয়াবা জব্দ নিঃসন্দেহে বড় সাফল্য। তবে মাদকের এই ভয়াবহ আগ্রাসন থামাতে হলে আইনি প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করে সাজা কার্যকর করতে হবে এবং একইসাথে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা প্রয়োজন। স্থানীয়দের আশা-এই অভিযান হবে দীর্ঘমেয়াদি এবং মাদক চক্রের শিকড় উপড়ে ফেলতে প্রশাসন আরও কঠোর হবে।
অনলাইনে পড়তে:www.thenabajagaran.com