বিএনপি নেতার রোষানলে চা দোকানী, দোকান খোলার চাবি এখন কোন নেতার হাতে (পর্ব ০২)

বিশ্লেষণ মূলক প্রতিবেদনঃ পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির প্রতিপক্ষ এখন চা দোকানী। উপজেলার করফা বাজারের পূর্ব পাড়ের আ: আলীম হাওলাদারের চা দোকান এখন বিএনপি নামধারী এক ইউনিয়ন নেতার টার্গেটে পরিনত হয়েছে। ঐ চা দোকানীর দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে আওয়ামী লীগ থেকে পূনর্বাসিত হওয়া একদল সন্ত্রাসী এবং কিছু বহিরাগত যুবকের দ্বারা। আর এ সন্ত্রাসী গ্রুপটির নেতৃত্বে রয়েছে সারেংকাঠী ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি নিজেকে নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান অহিদ এর খুব কাছের লোক বলে পরিচয় দেন। তিনি এটাও বলে বেড়াচ্ছেন যে তার নেতা ওয়াহিদুজ্জামান অহিদ এর নির্দেশ ছাড়া তিনি কোনো কাজ করেন না।

বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ, তথ্য চিত্র, ভুক্তভোগীর সাক্ষাৎকার গ্রহন এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ননায় উঠে আসা তথ্য নিয়ে আজকের এই বিশ্লেষণমূলক প্রতিবেদন। ঘটনার পূর্বপর বিশ্লেষণে দেখা যায় গত ২৬ মে সন্ধার পরে একটি তুচ্ছ ঘটনার মাধ্যমে মব সৃষ্টির উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসীরা আবদুল আলিমের চায়ের দোকানে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে দোকান ভাংচুর, টাকা ও মালামাল লুটপাট করে। চা দোকানদার ও তার দুই পুত্রকে আওয়ামী লীগ তকমা লাগিয়ে লাঠি সোটা ও লোহার রড দিয়ে মারতে শুরু করে। যারা আক্রমণ করে তাদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ থেকে আসাদের হাত ধরে বিএনপিতে পুনর্বাসিত হয়েছে। স্হানীয়দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। কিছুক্ষন পর আসাদ সেখানে উপস্থিত হলে আবার কথা কাটাকাটি শুরু হয়। তারই ইন্ধনে এবং উপস্থিতিতে দ্বিতীয় দফা দোকানে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। যার ভিডিও ফুটেজ ও স্থীর চিত্র সর্বত্র নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। ঐ সময় আবদুল আলিম ও তার দুই পুত্র স্হানীয়দের সহায়তায় পালিয়ে প্রান বাঁচায় ।
তারপর থেকে আবদুল আলিমের আয়ের উৎস এ চা দোকানটি সন্ত্রাসী বাহিনীর ভয়ে খুলতে পারছিল না। সে বিভিন্ন লোকের দ্বারস্থ হয়। অবশেষে ঘটনার এক সপ্তাহ পর আসাদ এক প্রহসনমূলক সমাধান দেয়। আলিমের দোকান লুট হয়েছে। সে মার খেয়েছে এবং তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হয়। নেতা বলে কথা। আগামীর হবু চেয়ারম্যানের মিমাংসার নমুনা।

পরবর্তী ঘটনায় জানা যায়, গত ১০ জুন করফা বাজারে খেলাকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। বাজারের পশ্চিম পাড় থেকে একদল সন্ত্রাসী পূর্ব পাড়ে এসে আবদুল আলিম সহ তার পাশের দোকানেও ভাংচুর চালায়। আলিম ও তার সন্তানেরা জীবন রক্ষার্থে পালিয়ে যায়। ঘটনার দিন থেকে আজ পর্যন্ত আসাদ বাহিনীর ভয়ে আবদুল আলিম তার দোকান খুলতে পারেনি। তার দুই পুত্রও আসাদ বাহিনীর ভয়ে আত্মগোপনে থাকতে বাধ্য হচ্ছে। এলাকার বয়োবৃদ্ধরাও জানায় তাদের জীবনেও এমন তান্ডব এ এলাকায় দেখেনি যা আসাদ বাহিনী ঘটিয়েছে। আসাদ ও তার বাহিনীর সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নিয়ে ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় সাপ্তাহিক নবজাগরণ অনলাইন সংস্করণে সংবাদ প্রকাশিত হলে সে নিয়ম নীতি না মেনে খোলা মেলা জায়গায় নবজাগরণের বিরুদ্ধে একটি সংবাদ সন্মেলনের আয়োজন করে। তার মূর্খ চেলাবেলারা নিজেদের অপকর্ম ঢাকার জন্য পত্রিকাকে কটাক্ষ করে ভুল তথ্য দিয়ে বক্তব্য দেয়। যাহা নেট দুনিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। অশ্রাবণ ভাষা প্রয়োগে ফেইসবুকে মন্তব্যও করা হয়। যারা বক্তব্য দেয় তাদের অবস্থান পর্যালোচনা করে আসাদের কোয়ালিটি অনুমান করা যায়। যেমন গুরু তেমন তার সাগরেদ। ঐ সংবাদ সন্মেলনে চা দোকানীকে ধরে নিয়ে জোর করে বক্তব্য প্রদান করানো হয় যে,তার দোকানে ভাংচুর ও লুটপাট হয়নি। এটা যদি সত্যি হয় তাহলে আজও কেন সন্ত্রাসীদের ভয়ে দোকানদার দোকান খুলতে পারছে না। তার কাছে কি সন্ত্রাসীদের অন্য কিছু চাওয়া আছে?

এদিকে আসাদ সহ তার বাহিনীর সদস্যরা বলে বেড়াচ্ছে আলিমের চায়ের দোকান খুলতে হলে নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান অহিদ এর পারমিশন লাগবে। তাহলে কি উপজেলার শীর্ষ নেতাও চা দোকানীর সাথে সংঘাতে জড়িয়েছে? নাকি আসাদ তার নাম ব্যাবহার করে তাকে এত নিচে নামিয়েছে? তাহলে কি আসাদের কথাই সত্যি যে, সে তার লিডারের নির্দেশের বাহিরে চলে না। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে আসাদ আগামীতে ইউপি চেয়ারম্যান হতে চায়। তাই আওয়ামী লীগ বিএনপির সমন্বয়ে একটি বাহিনী গড়ে তুলেছে। তাদের নিয়ে মহড়া দিয়ে এলাকায় তার ভবিষ্যৎ অবস্থান জানান দিচ্ছে। বিএনপি সংগঠিত করা এখন তার মূল লক্ষ্য নয় আগামীর ইউপি চেয়ারম্যান হওয়া মূল লক্ষ্য। আসাদ ও তার বাহিনীর সাম্প্রতিক কর্মকান্ড দেখে এলাকার সাধারণ জনগণের বিএনপির প্রতি নেতিবাচক মনোভাবের সৃষ্টি হয়েছে।
( আরও বিস্তারিত জানতে নবজাগরণের সাথেই থাকুন)