নোয়াখালী বিভাগ চাই-আবদুল মাবুদ দুলালের কণ্ঠে জেগে উঠছে উপকূলীয় চেতনার নতুন অঙ্গীকার

মো:আবু তাহের পাটোয়ারী:
বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষের প্রাণের দাবি-“নোয়াখালী বিভাগ চাই।”এই স্লোগান আজ কেবল একটিমাত্র ব্যানারে নয়, প্রতিটি নোয়াখালীবাসীর হৃদয়ের গভীরে প্রজ্বলিত আগুনের মতো জ্বলে উঠেছে।ঢাকাস্থ নোয়াখালী জেলা সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও অতিরিক্ত ডিআইজি মো. আবদুল মাবুদ দুলাল যখন প্রকাশ্যে এই দাবির প্রতি সমর্থন জানান, তখন আন্দোলনটি এক নতুন প্রেরণা পায়-প্রশাসনিক মহলের মধ্যেও যে নোয়াখালীর জন্য ভালোবাসা ও আত্মপরিচয়ের দায়বোধ রয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

নোয়াখালীর আত্মপরিচয় ও আন্দোলনের শিকড়
নোয়াখালী-একটি নাম, একটি ঐতিহ্য, একটি গর্বের প্রতীক।এই জনপদ একদিকে মেঘনার বুকে গড়ে উঠেছে, অন্যদিকে প্রবাসের ঘামে রচিত করেছে বাংলাদেশের অর্থনীতির এক বিশাল স্তম্ভ।স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে শিক্ষা, সাংবাদিকতা, চিকিৎসা ও প্রশাসনে নোয়াখালীর অবদান অস্বীকার করার উপায় নেই।তবুও দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলটি প্রশাসনিকভাবে বঞ্চিত ও অবহেলিত।একটি সময় ছিল যখন “চট্টগ্রাম বিভাগের ছায়া” অথবা “কুমিল্লা বিভাগের নিয়ন্ত্রণ”-এই দুইয়ের মাঝখানে নোয়াখালী ছিল অবজ্ঞার শিকার।আজ সেই অবহেলার প্রতিকার হিসেবেই উঠেছে স্লোগান-

“নোয়াখালী বিভাগ চাই।”দুলালের ভূমিকা: দায়িত্ব ও দায়বোধের সমন্বয় মো: আবদুল মাবুদ দুলাল কেবল একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নন, তিনি একজন সচেতন নাগরিক ও নোয়াখালীর সেনবাগের কৃতিসন্তান সন্তান।
তিনি বুঝতে পেরেছেন-এই দাবিটি দলীয় রাজনীতির নয়, এটি আঞ্চলিক পরিচয় ও ন্যায়বিচারের প্রশ্ন।
তার প্রচারণামূলক পোস্টারে লেখা-

“বৃহত্তর নোয়াখালীবাসীর প্রাণের দাবি-নোয়াখালী বিভাগ চাই।”এই ঘোষণা একটি বার্তা দেয়: রাষ্ট্রের ভেতর থেকেও এখন নোয়াখালীপ্রীতি এক জাগ্রত সামাজিক দায়িত্ববোধে পরিণত হয়েছে।তিনি প্রশাসনিক পেশার সীমাবদ্ধতার বাইরে থেকেও নোয়াখালীর অধিকার নিয়ে সাহসী অবস্থান নিয়েছেন-যা একদিকে প্রবাসী ও স্থানীয় জনগণের মধ্যে নতুন আস্থা তৈরি করেছে, অন্যদিকে আন্দোলনের দাবিকে দিয়েছে নৈতিক মর্যাদা।

কেন নোয়াখালী বিভাগ?এই দাবির পেছনে রয়েছে তিনটি বাস্তব যুক্তি-ভৌগোলিক সামঞ্জস্য: ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর-এই তিন জেলার ভাষা, সংস্কৃতি, নদীপথ, অর্থনীতি একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।
প্রশাসনিক কার্যকারিতা: চট্টগ্রাম বা কুমিল্লা থেকে দূরত্বের কারণে অনেক নাগরিকসেবা বিলম্বিত হয়; নোয়াখালী বিভাগ হলে প্রশাসনিক গতি বাড়বে।
সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ঐক্য: নোয়াখালীর নিজস্ব ভাষা, ঐতিহ্য, সাহিত্য, সাংবাদিকতা-সবই পৃথক এক সাংস্কৃতিক পরিসর সৃষ্টি করেছে।অতএব, নোয়াখালী বিভাগ শুধু প্রশাসনিক সুবিধা নয়-এটি আত্মপরিচয়ের বাস্তব স্বীকৃতি।

বৃহত্তর ঐক্যের আহ্বান: আবদুল মাবুদ দুলালের এই অবস্থান যেন আন্দোলনের পরিধি আরও প্রসারিত করেছে।আজ ছাত্র-শিক্ষক, শ্রমিক, প্রবাসী, ব্যবসায়ী-সবাই একত্রে বলছে, “আমরা নোয়াখালী বিভাগ চাই।”নোয়াখালীর মানুষ আর কুমিল্লার সঙ্গে যুক্ত হতে চায় না; তারা নিজেদের ইতিহাসের মর্যাদা চায়, নিজেদের নামে গর্ব করতে চায়।এই জাগরণ এখন কেবল আন্দোলন নয়-এটি এক আত্মসম্মান পুনর্দখলের অভিযান।এ আন্দোলনের প্রতিটি ব্যানার, প্রতিটি স্লোগান, প্রতিটি সামাজিক পোস্টার এখন হয়ে উঠছে নতুন বাংলাদেশের বিকেন্দ্রীকরণের প্রতীক।

নোয়াখালী বিভাগ চাওয়ার এই দাবি রাজনীতির বাইরে-এটি সময়ের প্রয়োজন, জনতার দাবি ও ইতিহাসের অপরিহার্যতা।মো:আবদুল মাবুদ দুলাল এই দাবির সঙ্গে নিজের কণ্ঠ মিলিয়ে প্রমাণ করেছেন-একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা যেমন রাষ্ট্রের সেবক, তেমনি তিনি তাঁর মাটিরও সন্তান।নোয়াখালী হবে বিভাগ-এটি আর কল্পনা নয়, এটি এখন এক আন্দোলনের মন্ত্র।এই মন্ত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে সাধারণ মানুষ, প্রবাসী ভাই, সাংবাদিক, শিক্ষক, তরুণ সমাজ-আর তাদের পাশে এখন প্রশাসনের সন্তানরাও।

সবাই শেয়ার করুন
অনলাইনে পড়তে:www.thenabajagaran.com
https://www.facebook.com/share/p/16KvLgiAPq/