নবজাগরণ বিশেষ প্রতিবেদন:
বাংলাদেশ পরিবেশ পরিক্রমা মানবাধিকার সাংবাদিক সোসাইটির (BEHJ) নবনির্বাচিত সিলেট বিভাগীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ সিলেট বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী এবং সিলেট রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ারুল হক-এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
বুধবার (৫ নভেম্বর ২০২৫) বিকাল ৩টায় বিভাগীয় কমিশনারের দপ্তরে এবং বিকাল ৪টায় অতিরিক্ত ডিআইজি কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সিলেট বিভাগীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ-সভাপতি মোঃ আশাহীদ আলী আশা, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ সিরাজুল ইসলাম মাসুক, সহ-সভাপতি আলেক আহমদ,সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছাদ উদ্দিন,মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বকুল, ও নির্বাহী সদস্য আব্দুল মমিন নোমান।
সাক্ষাৎকালে সংগঠনের পক্ষ থেকে মানবাধিকার সাংবাদিক সোসাইটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের মহাসচিব ও নবজাগরণ পত্রিকার সম্পাদক মো:আবু তাহের পাটোয়ারী-এর স্বাক্ষরিত অবহিতকরণ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের প্রাসঙ্গিক চিঠি বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত ডিআইজি (সিলেট) মহোদয়ের নিকট হস্তান্তর করা হয়।
বিভাগীয় কমিশনার খান মোঃ রেজা-উন-নবী আন্তরিকতার সঙ্গে চিঠিটি গ্রহণ করে সংগঠনের প্রতি সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন এবং মানবাধিকার সাংবাদিকদের কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দেন। একইভাবে অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ আনোয়ারুল হকও সংগঠনের কর্মতৎপরতার প্রশংসা করেন এবং ভবিষ্যতেও সহযোগিতা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রতিনিধি দল মানবাধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষায় প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করে এবং ভবিষ্যতে যৌথভাবে মানবকল্যাণে কাজ করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির মহাসচিব ও ভাইস চেয়ারম্যান মো: আবু তাহের পাটোয়ারী এবং এম এম ত্বোহা ডিআইজি মহোদয় ও বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের প্রতি তাদের সৌহার্দ্য,আপ্যায়ন ও সঠিক দিকনির্দেশনার জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
মানবিক সাংবাদিকতার নবজাগরণ: এক নতুন রাষ্ট্রচেতনার সূচনা এই সৌজন্য সাক্ষাৎটি কেবল একটি আনুষ্ঠানিক প্রোটোকল নয়-এটি বাংলাদেশের গণমানবিক সাংবাদিকতার নতুন যাত্রার বহুমাত্রিক প্রতীক।
আজকের বাংলাদেশে সাংবাদিকতা আর শুধুমাত্র তথ্য পরিবেশন বা সংবাদ সংকলনের পেশা নয়; এটি পরিণত হয়েছে ন্যায়, সত্য ও মানবিকতার পক্ষে এক বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনে।
মানবাধিকার সাংবাদিক সোসাইটির সিলেট সাক্ষাৎ তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যেখানে প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায় ও নাগরিক সাংবাদিকরা একই টেবিলে বসে মানবতার পক্ষের নতুন অঙ্গীকার ঘোষণা করেছেন।
রাষ্ট্রযন্ত্রের যেকোনো পরিবর্তন শুরু হয় মানুষের চেতনা থেকে। সেই চেতনার বাহক আজকের মানবাধিকার সাংবাদিকরা-যারা কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডার প্রচারক নন, বরং নিপীড়িত মানুষের কণ্ঠস্বর, প্রান্তিকের প্রতিনিধি, ন্যায়ের বার্তাবাহক। ভাইস চেয়ারম্যান জনাব এম এম ত্বোহা-এর প্রজ্ঞা ও দিকনির্দেশনা, এবং মহাসচিব মোঃ আবু তাহের পাটোয়ারী-এর সাহসী নেতৃত্বে সংগঠনটি আজ নতুন এক উচ্চতায় পৌঁছেছে। তারা প্রমাণ করেছেন-মানবাধিকার সাংবাদিকরা এখন আর কেবল পর্যবেক্ষক নন, বরং রাষ্ট্রীয় নৈতিকতা পুনর্গঠনের সহযোদ্ধা।
২০০৪ সালে BEHJ-এর যাত্রা শুরু হয়েছিল এক প্রায় একাকী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। তখন মানুষ ভাবত-“মানবাধিকার” মানেই বিদেশি প্রকল্প, রিপোর্ট লেখা বা সম্মেলনের আয়োজন।কিন্তু দুই দশক পর বাংলাদেশে মানবাধিকার সাংবাদিকতা হয়ে উঠেছে এক সামাজিক বিপ্লবের নাম। আজ এই আন্দোলনের লক্ষ্য কেবল তথ্য প্রকাশ নয়, বরং ন্যায়বোধ ও মানবিক চেতনার পুনর্জাগরণ।
এই সাক্ষাৎ প্রশাসন ও জনগণের মধ্যে এক নতুন সেতুবন্ধনের ইঙ্গিত দেয়। এক সময় সাংবাদিকতা ও প্রশাসন একে অপরের বিপরীতে দাঁড়াত। এখন দেখা যাচ্ছে-রাষ্ট্রযন্ত্রের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও উপলব্ধি করছেন, সাংবাদিকরা যদি মানবতার পক্ষে কাজ করেন,তবে রাষ্ট্রও ন্যায় ও নিরাপত্তার ভিত্তিতে আরও শক্তিশালী হয়। বিভাগীয় কমিশনার ও অতিরিক্ত ডিআইজি মহোদয়ের আন্তরিক আশ্বাস সেই আশার নতুন অধ্যায় রচনা করেছে।
আজ যখন বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ, তখন বাংলাদেশের মানবাধিকার সাংবাদিকরা নিজেরাই সেই বিশ্বাস পুনর্গঠনের দায়িত্ব নিয়েছেন।
তাদের হাতে কলম ও ক্যামেরা,কিন্তু অন্তরে রয়েছে এক অবিচল মানবিক শক্তি-যা অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে শেখায়, নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে প্রেরণা জোগায়।
এই সাক্ষাৎ তাই শুধুই একটি সংবাদ নয়-এটি এক নৈতিক পুনর্জন্মের ঘোষণা।এটি বাংলাদেশের মানবিক রাষ্ট্রচিন্তার বীজরোপণ,যেখানে রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে ন্যায়, মর্যাদা ও পরিবেশ সচেতনতা। যেখানে সাংবাদিক,প্রশাসন ও সাধারণ মানুষ সবাই মিলে একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন রচনা করবে-একটি বাংলাদেশ, যেখানে মানুষকে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ পরিক্রমা মানবাধিকার সাংবাদিক সোসাইটির এই অধ্যায় আমাদের মনে করিয়ে দেয়:
“সংবাদ তখনই অর্থবহ,যখন তা মানুষের পক্ষে দাঁড়ায়;
সাংবাদিক তখনই পূর্ণ,যখন সে ন্যায়ের পক্ষে বিদ্রোহী।”
এই বিদ্রোহই মানবাধিকার সাংবাদিকতার আত্মা-
আর সিলেট সাক্ষাৎ সেই আত্মারই নবজাগরণ।





