নবজাগরণ রিপোর্ট:
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে পরিবেশ রক্ষা ও মানবাধিকার রক্ষা-এই দুটি ক্ষেত্র আজ পরস্পর নির্ভরশীল একটি আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। সেই যৌথ চেতনারই প্রতিফলন দেখা গেল সোমবার ৩ নভেম্বর ২০২৫, মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। বাংলাদেশ পরিবেশ পরিক্রমা মানবাধিকার সাংবাদিক সোসাইটির নবনির্বাচিত সিলেট বিভাগীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ সিরাজুল ইসলাম মাসুক, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বকুল এবং নির্বাহী সদস্য মোঃ আশরাফুল আলম আজাদ জেলা প্রশাসক মোঃ ইসরাইল হোসেন এবং পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন পিপিএম এর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন।
এই সাক্ষাৎ শুধু প্রথাগত সৌজন্য নয়-বরং এটি ছিল এক নতুন ধারার সামাজিক আন্দোলনের প্রতিশ্রুতি। সাক্ষাতে উপস্থিত প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ পরিবেশ পরিক্রমা মানবাধিকার সাংবাদিক সোসাইটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের মহাসচিব ও নবজাগরণ পত্রিকার সম্পাদক মোঃ আবু তাহের পাটোয়ারীর স্বাক্ষরিত চিঠি হস্তান্তর করেন, যাতে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা, জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় এবং প্রশাসনিক সহযোগিতা বিষয়ে বিস্তারিত নির্দেশনা ও অনুরোধ তুলে ধরা হয়।
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সাংবাদিক নেতা এম এম তোহার সার্বিক নির্দেশনায় করনীয় নির্ধারনে কর্মসূচি প্রনয়নের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে।স্লোগান ছিল-“মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায়,পরিবেশ সুরক্ষা-কলম চলবে অবিরাম।”
এই বার্তাটি শুধু একটি সংগঠনের মন্ত্র নয়,এটি আজকের বাংলাদেশের একটি প্রয়োজনীয় ঘোষণাপত্র। যখন দেশের প্রতিটি জেলা, উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তন, বন উজাড়, নদী দখল, বায়ুদূষণ ও ভূমি দখল মানবজীবনের ওপর সরাসরি আঘাত হানছে-তখন মানবাধিকার রক্ষার সবচেয়ে বড় শর্তই হয়ে উঠেছে পরিবেশ রক্ষা।
সিলেট অঞ্চল,বিশেষত মৌলভীবাজার,দীর্ঘদিন ধরেই প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। চা-বাগান, পাহাড়ি বন,নদী ও হাওর-এসব শুধু প্রকৃতির সৌন্দর্য নয়,এখানকার মানুষের জীবন-জীবিকার অংশ। কিন্তু একইসঙ্গে এই অঞ্চল জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর একটি। তাই “বাংলাদেশ পরিবেশ পরিক্রমা মানবাধিকার সাংবাদিক সোসাইটি”-র সিলেট বিভাগীয় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য এই এলাকা হচ্ছে কার্যত এক পরীক্ষাগার, যেখানে মানবাধিকার ও পরিবেশ ন্যায়ের বাস্তব প্রয়োগ ঘটাতে হবে মাঠপর্যায়ে।
জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধিদল প্রশাসনিক সহযোগিতা,মাঠপর্যায়ের সাংবাদিকদের নিরাপত্তা, এবং পরিবেশ অপরাধ সংক্রান্ত অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি বিষয়ে মতবিনিময় করেন। এ সময় জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সংগঠনের সদ্য অনুমোদিত কমিটিকে অভিনন্দন জানান এবং প্রশাসনিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
এই সাক্ষাৎকে অনেকেই “একটি নৈতিক ও সাংগঠনিক অগ্রযাত্রার সূচনা” হিসেবে দেখছেন। কারণ, মানবাধিকার সাংবাদিকতা শুধু সংবাদ প্রকাশ নয়-এটি একটি জবাবদিহিমূলক চর্চা,যেখানে সাংবাদিকরা হয়ে ওঠেন সমাজের বিবেক। একইসঙ্গে পরিবেশ সাংবাদিকতা এখন কেবল প্রতিবেদন নয়,বরং নীতি-পর্যায়ের প্রভাব সৃষ্টি করতে সক্ষম একটি আন্দোলন।
মাওলানা সিরাজুল ইসলাম মাসুক ও তাঁর সহযোদ্ধারা আজ যে প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন-তা হলো,“মানবাধিকারের লঙ্ঘন ও পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে কলমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা।” এই নৈতিক সাহসই আজ প্রয়োজন বাংলাদেশের সাংবাদিক সমাজের।
বাংলাদেশ পরিবেশ পরিক্রমা মানবাধিকার সাংবাদিক সোসাইটির এই উদ্যোগ তাই কেবল একটি সংগঠনের আনুষ্ঠানিকতা নয়-এটি একটি দৃষ্টান্ত। একটি বার্তা, যে সাংবাদিকতা শুধুমাত্র সংবাদ নয়, বরং এটি সমাজ পরিবর্তনের চালিকা শক্তি।
সিলেট বিভাগের এই নবগঠিত কমিটি যদি মাঠপর্যায়ে আন্তরিকভাবে কাজ করতে পারে-পরিবেশের সুরক্ষা, মানবাধিকারের সুরক্ষা, প্রশাসনের সঙ্গে গঠনমূলক সমন্বয় ও তথ্যভিত্তিক সাংবাদিকতা-তাহলে এটি হতে পারে একটি মডেল। “নবজাগরণ”-এর মতো মুক্ত চিন্তার প্ল্যাটফর্ম এই আন্দোলনের ধারক হিসেবে থাকবে-যেখানে প্রতিটি কলম হবে প্রকৃতির ও মানুষের কণ্ঠস্বর।
https://www.facebook.com/share/p/15knttcs4q/
				
															
															




