নবীগঞ্জে নিরীহ মানুষকে নিঃস্ব করে যুবলীগ নেতা আবুল ও সবুজের আলিশান বাড়ী! তোলপাড়

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি।।
সুন্দর একটি জীবনের আশায় জীবিকার তাগিদে অনেকেই স্বপ্নের দেশ ইউরোপ যেতে চান। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে যুবলীগ নেতা বহুরূপী আবুল ও তার সহোদর সবুজ মিয়া নিরীহ মানুষদের টার্গেট করে ইউরোপ এর স্বপ্ন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। তাদের বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ রয়েছে অহরহ। বৈধ উপায়ে নির্দিষ্ট কোনো ব্যবসাও নেই তাদের। তবে কোটি টাকার আলিশান বাড়ি নির্মাণ করার পর আবারো আলোচনায় এসেছে প্রতারক এই দালাল চক্রকে নিয়ে।৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর যুবলীগ নেতা থেকে এখন তারা পরিচয় দেয় বিএনপি, যুবদল। তাদের এমন কর্মকান্ডে নবীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।ভুক্তভোগীদের মধ্যে বিরাজ করছে প্রচন্ড ক্ষোভের। যুবলীগের রাজনীতিতে থাকার কারণে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ২০১৮ সালে নবীগঞ্জ উপজেলার কালিয়াভাঙ্গা ইউনিয়নের রামপুর গ্রামে গিয়ে একটি নিরীহ পরিবারের কাছে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আবুল এবং তার সহোদরা ২ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি করতে যায়। পরে এই ঘটনায় তৎকালীন সময়ে হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা।
এছাড়াও বিদেশে পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন এলাকার সহজ সরল মানুষদের কাছ থেকে জাল-ভিসা বিমানের টিকেট দিয়ে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় আবুল ও সবুজ।
এদিকে নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের ৪ যুবককে মালদ্বীপ পাঠানোর কথা বলে জাল ভিসা দেয় সবুজ। এসময় তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয়া হয় ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা করে।পরে ওই এলাকার ভুক্তভোগী জিলডার হোসেন, খয়ের মিয়া, বুরহান মিয়াকে নিয়ে মানবপাচারকারী যুবলীগ নেতা সবুজ মিয়া তাদের নিয়ে ইন্ডিয়া পাড়ি দেয়, সেখান থেকে যায় নেপাল। পরবর্তীতে মালদ্বীপে গেলে ইমোগ্রশন পুলিশ তাদের চেক করে জাল ভিসা হওয়ার কারণে আটক করে এয়ারপোর্ট থেকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। তবে ফয়সল মিয়া ঢাকায়ই আটক হয়ে যান।অপরদিকে নবীগঞ্জ উপজেলার বিজনা নদী নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাসাতে নিজ পিতা জাহির আলী হত্যার অভিযোগ রয়েছে আবুল ও তার সহোদরদের বিরুদ্ধে। সবুজ মিয়া গংদের বিচারের দাবিতে ঢাকা সিলেট মহাসড়ক আইনগাও নামকস্থানে মানববন্ধন ও করেন এলাকাবাসী।স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, যুবলীগ নেতা আবুল মিয়া এবং তার সহোদর সবুজ মিয়া গং বাশডর দেবপাড়া এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন। আওয়ামিলীগের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে নিরীহ মানুষদের হয়রানি করাসহ মামলাবাজি ছিল তাদের মূল কাজ। দেশের পটপরিবর্তন হলে এখন তারা বিএনপি, যুবদল পরিচয় দিয়ে আবারো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাদের মামলাবাজির ভয়ে প্রকাশ্য কেউ মুখ খুলতে চায় না। তারা মনে করছেন অদৃশ্য একটি অপশক্তি আবুল, সবুজের পেছনে রয়েছেন।নবীগঞ্জ পৌর শহরের বরাক নগরে আবুল গংদের ৫ তলা পাউন্ডেশন আলিশান বাড়ী নির্মাণ হওয়ার পর থেকে আবারো আলোচনায় দুই ভাই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবুল এবং সবুজ এলাকার নিরীহ ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রতারণা করে নিয়া আসা টাকা দিয়ে অপশক্তি সঞ্চয় করেছে। দুদকের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এলাকবাসী। নবীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি,যুবদলের দায়িত্বশীল নেতাদের কাছ থেকে জানা যায়, আবুল মিয়া এবং সবুজ মিয়া আওয়ামিলীগের রাজনীতিতে জড়িত। ৫ আগস্টের আগে ছাত্র-জনতা আন্দোলনে হামলা করতে দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে বাস-ট্রাক ভর্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলায় অংশ নিয়েছিল।