খামেনি যা করেছেন, ড.ইউনূস তা করছেন নিজের ঢাকায়”

-মো: আবু তাহের পাটোয়ারী:
“হিটলার ছিলো একক, মোদি হলেন সংগঠিত হিটলারতন্ত্রের প্রতীক। বিজেপি সরকার আজ হিন্দুস্তানকে পরিণত করেছে বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণার ফ্যাক্টরিতে।”

ইতিহাস সৃষ্টি হয় যখন নেতৃত্ব সময়কে অতিক্রম করে। ইরানে আয়াতুল্লাহ খামেনি ঠিক সেই কাজটাই করলেন-নিজের ব্যক্তিগত ক্ষমতা ছেড়ে ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড তথা IRGC-এর হাতে দেশের সর্বোচ্চ কর্তৃত্ব তুলে দিলেন। এটা কেবল একটি সাংবিধানিক পদক্ষেপ নয়, বরং এক বিপ্লবী বার্তা: “যদি যুদ্ধ আসে, তবে নেতৃত্ব থাকবে রণাঙ্গনের সেনার হাতে, আমলাতন্ত্রের নয়।”

ইরান: যাদের কেউ পরাজিত করতে পারেনি

৫ হাজার বছরের ইতিহাসে পার্সিয়ানদের পরাজিত করা যায়নি। আলেকজান্ডার দখল করেন ঠিকই, কিন্তু নিজে রণক্ষেত্রেই শেষ।চেঙ্গিস খান দিকবিদিক ছুটে দুনিয়া দখলে নিলেও পার্সিয়ান প্রতিরোধে ঠেকেছিল।

সদ্য ইতিহাসে: আমেরিকা, সৌদি আরব, ইরাক-তিন দেশের সম্মিলিত শক্তিও ইরানকে পরাস্ত করতে পারেনি আট বছরের যুদ্ধে।
এই পরম্পরায় আজও ইরান মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কারণ তাদের আছে জাতীয় ঐক্য, সুসংগঠিত বিপ্লবী বাহিনী ও জনগণের অন্ধ সমর্থন।

বাংলাদেশ: ১৬ বছরের অপশাসনের পর রক্তঝরা উত্তরণের পথে
১৬ বছর পর্যন্ত এই দেশে ভোটহীন রাতের নির্বাচন, দিনের ভোটে গুম-খুন, লুটপাট, অবিচার, বিচারহীনতা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ পাচার, রিজার্ভ চুরি-এমন কোনো রাষ্ট্রীয় অপরাধ বা দুর্নীতি অবশিষ্ট ছিল না যা ঘটে নাই।

একটার পর একটা রাজনৈতিক প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়েছে। অবশেষে, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে ছাত্র-জনতার জীবন আর রক্তের বিনিময়ে ভেঙে পড়েছে এই ফ্যাসিস্ট নিষ্পেষণতন্ত্র।

তীব্র গণআন্দোলনের মুখে অবশেষে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্বে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এটাই সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত-যেখানে “ব্যালট নয়, রক্ত দিয়েই” প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে গণতন্ত্রের অন্তঃসার।

একটি আন্তর্জাতিক মাপের নেতৃত্ব:নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সবে মাত্র ১১ মাস হয়েছে; বলা যায় শিশু সরকার। অথচ দক্ষিণ এশিয়ার হুমকিদাতা দাদারা এখনো মুখ খুলতে পারছে না।নিদারুণ অসহ্য বেদনাদায়ক- কিন্তু কেন?

ভারত বানিজ্য বন্ধ করলো,
ভিসা বন্ধ করলো,
ট্রান্সশিপমেন্টে বাধা দিলো-তবুও বাংলাদেশ মাথা উঁচু রেখেছে।কারণ এখন রাষ্ট্রের চালকের আসনে কেউ আছেন যিনি লুটপাট নয়, বিবেক, উন্নয়ন ও সহনশীলতা দিয়ে রাষ্ট্রকে চালাতে জানেন।
ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি:ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে হুমকি কারা দিচ্ছে?
ড. ইউনূস না থাকলে, বাংলাদেশ আজ হয়তো RAW-এর “অপারেশন সিদুর”-এর শিকার হতো।

তবে আজ যখন রাষ্ট্রে একজন মেধাবী, দুনিয়ার সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন বাঙালি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তখন তাকে ভয় দেখাচ্ছে কারা?

রাজনৈতিক দেউলিয়ারা?
লুটেরা ব্যবসায়ীচক্র?
বিদেশি গোয়েন্দাদের দোসর দালালগণ?
একটা বিষয় স্পষ্ট: অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইউনূস আছেন বলেই বাংলাদেশ মাথা নত করেনি।

“সময়ের ডাক” শুনে কি আমরা সাড়া দিব না?”
বিগত ৫৪ বছরে আমরা পেয়েছি
ক্ষমতা দখলের হিংস্র সংস্কৃতি,
রাজনীতির ছায়ায় সুইস ব্যাংকে টাকা জমা দেয়া ‘গরিবের শত্রু’

পেট্রোলবোমা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড,
অর্থনীতির আত্মহত্যা।
আজ একজন বিশ্বমাপের নেতা যখন গণআন্দোলনের ভিত্তিতে দায়িত্ব নিয়েছেন, তখন তার পেছনে আমাদের দাঁড়ানো ইতিহাসের ডাক।

কী করণীয় এখন?
১. ইউনূসের নেতৃত্বে রাষ্ট্র শুদ্ধকরণ প্রক্রিয়াকে সর্বাত্মক সমর্থন দিতে হবে।
২. ভারতীয় দালাল, মিডিয়া দোসর ও ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের মুখে আনতে হবে।
৩. “বাংলাদেশ চালাবে জনগণ”-এই নীতির ভিত্তিতে একটি নতুন সংবিধান রচনার উদ্যোগ নিতে হবে।
৪. আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও গণমাধ্যমে বাংলাদেশের ন্যায্য অবস্থান তুলে ধরতে হবে।

সামনে এগিয়ে যাওয়ার এখনই সময়:
যদি খামেনি পারেন নিজের ক্ষমতা দেশের হাতে তুলে দিতে,
তাহলে আমরা নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড.ইউনূসের নেতৃত্বে জনগণের বাংলাদেশ গড়তে ভয় পাব কেন?

আপনি কী বলবেন? এখনই কি সময় নয়, রক্তের দামে কেনা এই স্বাধীন নেতৃত্বের পাশে দাঁড়ানোর?
লেখক:সম্পাদক-নবজাগরণ।
শেয়ার করুন সবাই অনলাইনে পড়তে-
www.thenabajagaran.com