তারা চাচার খোলা চিঠি -৪
প্রাপক: মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড মুহাম্মদ ইউনূস; শাসকগণ, রাষ্ট্রযন্ত্রের চালকেরা
প্রেরক: তারা চাচা – গেরামের মাটির ভিতর গেঁথে থাকা এক খেটে খাওয়া মানুষ
বিষয়: উচ্চকক্ষ, পিআর পদ্ধতি, জুলাই যোদ্ধারা, আর গেরামের মাইনসের চিঞ্জি-বিঞ্জি কথা
চাচা গো, কতা কইতেছি সরাসরি – কাঁঠাল ভাঙার মতো খোলস ছাড়ানো কতা।
আপনেগো এইবারের কামে মনডা হেরিকইন হয়ে যায়।
একজন প্রধানমন্ত্রী সারা জীবন গদিতে বইয়া থাকবো না- এইডা তো বইলা ফালাইছি না কইলাম! তারপরে ১০০ আসনের একখান উচ্চকক্ষ, যেইডায় PR পদ্ধতিতে ভোট হইবো- এহন কতা বুঝেন!
মানে, যত ভোট তত আসন।
৩০% ভোট? ৩০টা সিট।
১৫%? ১৫টা।
এইডা হইলে তো কুমিল্লার এক মাদরাসার হুজুর কিংবা নেত্রকোনার এক আদিবাসী দুলালীও সংসদে গিয়া কতা কইবার পারবো।কিন্তু চাচা হইয়া কিছু বুলার লাইগ্যা কলিজা ফাইরা উঠে…
এক. আরে বাবা, মনোনয়ন দিয়া তেলবাজ বানাইয়েন না
পিআর পদ্ধতি যদি হয় গিয়া বড়লোকের শালা, এমপি সাহেবের ভাতিজা আর খালি চাটুকারদের পদবী – তাইলে গেরামের আব্দুল মালেক কুনদিন ঘরের বাহির হইবো?
দলগুলারে বলেন, চিটাগাংয়ের বাঁশখালীর মতো জায়গা থেইকা, বা ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের মতো গেরাম থেইকা, গরিব ঘরের মেধাবীদের তুইলা লইয়া আসুক।
দুই. সাড়ে ছয় লাখ ছেলে-মাইয়া ফেল করছে, তয় হেরা কি মানুষ না?একখান সাবজেক্টে ফেল করছে বইলা কি জীবনডা শেষ? এইডা কি ন্যায়?
মুরুব্বি হইয়া কই-বোর্ড চ্যালেঞ্জে যাইবার আগ পর্যন্ত ওদেরে কলেজে ভর্তি হবার সুযোগ দেন।
আপনে কি চান, খালি টিকটকে ঘুইরা ঘুইরা জীবন শেষ করে ফেলুক?
তিন. জুলাই যোদ্ধা মানেই খালি টিভিতে দেখা নেতাগো না
আমার নোয়াখালীর সেনবাগের ভাতিজা কামরুল ইসলাম ও মেহেরাব – ইস্কুলের ছাতা মাথায় দিয়া চইলা চইলা জুলাই বিপ্লবের পোস্টার বানাইছে।
ঢাকায় গিয়া ফেইসবুকে লাইভ করছে, মানুষেরে জাগাইছে।
এইসব গেরামের ছেলেমাইয়াগো নাম গেজেটে না থাকলে, কুনটা থাকবো?
চার. সেনা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কেউ যদি গুপ্তকাজে লিপ্ত হয় – জনগণ কই যাবে?
এইডা ভাবলে গায়ে মুরগি কাঁটা দেয় চাচাগো!
আশা করতেছি, আপনারা তদন্ত কইরা নিয়া, জনগণের পাশে থাকপেন।
পাঁচ. বন্যার পানি নামতেছে না -কারণ খাল-বিল মার্কেট হইয়া গেছে-এইডা কোনো উন্নয়ন না গো, এইডা গেরামের গলা টিপা!চট্টগ্রামের পটিয়ার নালার মতো স্রোত এখন কুমিল্লায় আটকা!কওন, ফেনীর গরিবেরা কী কইবো, যদি একখান বৃষ্টি হলেই ঘরে পানি ঢুকে?
শেষে কই, চাচা হইয়া বুক ঠুকি কই -গেরামের চিঠি গ্যাসে মাইরা ফালাইয়েন না!
এই উচ্চকক্ষ যেন হয় গেরামেরে নিয়া,
এই পিআর যেন হইবো টিকিট না- গলার আওয়াজ!
এই গণতন্ত্র যেন হয়, চাটগাঁয়ের বুড়া মা, ময়মনসিংহের হেনা বেগম, আর নোয়াখালীর চান মিয়া’র কথার জায়গা।
তারা চাচা কইতেছে-আগামী প্রজন্ম যেন কইতে পারে,
“চাচারা কতা কইছিলো, সেইডাই হইছিলো নতুন বাংলাদেশের গল্প।”
তোমাদের তারা চাচা
মাটির নিচ থেইকা হাল চাষ কইরা কইরা, মানুষেরে জাগাইতেছি
গেরামের চিঠির ঘ্রাণ যদি শহরে লাগে, তাইলে জানবো- কেউ একজন ঠিক পড়ছে।
অনলাইনে পড়তে www.thenabajagaran.com