বিশেষ প্রতিবেদন :
১৩ বছর পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় আগমন শুধু কূটনৈতিক সৌজন্য নয়, এটি দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে এক নতুন সমীকরণের সূচনা।
১৯৭১ সালে ভারতের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো হয়েছিল। সিমলা চুক্তির মতো নানা ছকে বাংলাদেশকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল একতরফা ভূ-রাজনীতির দিকে। আজ সেই ইতিহাসের পর বাংলাদেশ নিজস্ব অবস্থান থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে নতুন আস্থা ও সম্পর্কের অধ্যায় রচনা করছে।
এই সফরে পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশাক দার,বিএনপি-জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ-এনসিপি এবং প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড.মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে-
১.বাংলাদেশের বৈদেশিক রিজার্ভ দাবির প্রশ্ন:স্বাধীনতার আগে পাকিস্তানের রিজার্ভের যে অংশ বাংলাদেশের ছিল,তা ফেরত দেওয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এটি কেবল অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার নয়,বরং ৫০ বছরের অসম্পূর্ণ ইতিহাসের সমাধান।
২.পারমাণবিক নিরাপত্তা চুক্তি:বাংলাদেশ-পাকিস্তান যৌথভাবে একটি নিরাপত্তা কাঠামো গড়ে তুলতে যাচ্ছে, যাতে দক্ষিণ এশিয়া পারমাণবিক সংঘাতমুক্ত থাকে। ভারতের সম্প্রসারণবাদী নীতির বিপরীতে এটি এক কৌশলগত সুরক্ষা বলয়।
৩.মানুষে-মানুষে সংযোগ ও নাগরিক নিরাপত্তা:ভিসা, বাণিজ্য,সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে উভয় দেশ একমত হয়েছে।
ভারতের মিডিয়া ও সরকারের মাথাব্যথা শুরু হয়ে গেছে-কারণ এই চুক্তিগুলো দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক সমীকরণে ভারতের একক আধিপত্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। দিল্লি স্পষ্ট বুঝতে পারছে,ঢাকা-ইসলামাবাদ-কলকাতার বাইরে নতুন এক আঞ্চলিক শক্তি উদিত হচ্ছে।
আজকের বাংলাদেশ আর ১৯৭১-এর বাংলাদেশ নয়। এই বাংলাদেশ নিজের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়, ইতিহাসের দায় মেটাতে জানে এবং কূটনীতিতে সমান মর্যাদার জায়গা দাবি করতে পারে।
কবিতা
“নতুন চুক্তির শপথ”
নতুন পথের ডাক
রক্তে লেখা ইতিহাসের গান,
হৃদয়ে জ্বলে স্বাধীনতার মান।
ষড়যন্ত্রে বাঁধা ছিলো যে স্বপ্ন,
আজ ভেঙে যায়-গড়ে নতুন দিগন্ত।
রিজার্ভের দাবি,ন্যায়ের আহ্বান,
পারমাণবিক শান্তির অঙ্গীকারে প্রাণ।
ঢাকা-ইসলামাবাদ হাত ধরে চলে,
ভারতের রাত ঘুম হারায় বলে।
নতুন সূর্য উঠুক এবার,
বাংলার কূটনীতিতে জাগুক আবার।
জনতার শক্তি, সত্যের জয়,
নতুন অধ্যায়ে মুক্ত হোক দেশময়।
লেখক:মো:আবু তাহের পাটোয়ারী
সম্পাদক,নবজাগরণ
www.thenabajagaran.com