মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে গণপূর্তের প্রকৌশলী কায়কোবাদকে হয়রানি
নিজস্ব প্রতিবেদক
সম্প্রতি গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল (ই/এম) শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদকে ঘিরে কিছু অখ্যাত অনলাইন এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, অসত্য ও মানহানিকর সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এসব প্রতিবেদনে তথ্যগত অসঙ্গতি, ভ্রান্ত ছবি সংযোজন এবং ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে বিতর্কিত করার চেষ্টা লক্ষ্য করা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “গণপূর্তে আবারও ইসকনের থাবা-অজান্তার তদবীরে দিশেহারা গণপূর্ত” শিরোনামে জনবাণী পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটির বৈঠক ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে অনুষ্ঠিত হয়, যার সদস্য-সচিব ছিলেন প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদ।
তদন্ত কমিটি পত্রিকার সম্পাদককে সংবাদের তথ্য-প্রমাণাদি উপস্থাপনের জন্য অনুরোধ জানায়। তবে সম্পাদক কোনো তথ্য দেওয়ার অনুরোধ উপেক্ষা করে হাস্যরসের ছলে জানিয়েছেন, তিনি আসবেন না। পরবর্তীতে তিনি কায়কোবাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের জন্য প্ররোচনা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অন্যদিকে, বাহান্ন নিউজ নামের অনলাইন দৈনিকে গণপূর্তের ই/এম-৮ নং ডিভিশনের মহাখালী এলাকার কিছু প্রকল্পে কথিত অনিয়ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। সেখানে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলীর ছবির পরিবর্তে জামালপুরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মোবারক হোসেনের ছবি ব্যবহার করা হয়। একইভাবে, আজকের দেশ ডট কমের অনলাইন সংস্করণে ই/এম কারখানা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বিষয়ে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশের সময় ই/এম-১ নং বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলমের ছবি জুড়ে দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং আইনগত পদক্ষেপের দাবি তুলেছেন।
কায়কোবাদের পেশাগত জীবন ও সুনাম : মো. কায়কোবাদ দীর্ঘদিন ধরে সরকারি নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পে স্বচ্ছতা, মান নিয়ন্ত্রণ এবং সময়োপযোগী বাস্তবায়নের মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেছেন। তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত প্রকল্পগুলোতে অনিয়ম বা বিলম্বের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি; বরং নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শেষ করার রেকর্ড রয়েছে।
সহকর্মীরা তাঁকে একজন “পেশাদার নেতা” হিসেবে বর্ণনা করেন, যিনি কর্মীদের অনুপ্রাণিত করেন দলগতভাবে কাজ করতে এবং সরকারি সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে। ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল শাখায় দায়িত্ব পালনের সময় তিনি ডিজিটাল মনিটরিং সিস্টেম চালু করেছেন, যাতে প্রকল্পের অগ্রগতি রিয়েল টাইমে পর্যবেক্ষণ করা যায়। তাঁর উদ্যোগে সার্কেল অফিসে সব নথিপত্র ই-ফাইলিং পদ্ধতিতে সংরক্ষিত হচ্ছে।
মো. কায়কোবাদ বলেন, “গণপূর্তের কাজ মানেই জনসেবার কাজ। প্রতিটি ইট-পাথরের কাজের মধ্যেই আমরা দেশের উন্নয়ন দেখি।”
অধীনস্থ প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, তিনি কঠোর কিন্তু ন্যায়নিষ্ঠ কর্মকর্তা, দায়িত্ব পালনে আপসহীন হলেও সহকর্মীদের সম্মান ও স্বাধীনতা বজায় রাখেন। তাঁর পেশাগত সততা ও মানবিক নেতৃত্বের ফলে অফিসে ইতিবাচক কর্মপরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন ও উদ্ভাবনী উদ্যোগ : বর্তমানে মো. কায়কোবাদ সরকারি ভবনগুলোতে জ্বালানি দক্ষ লাইটিং সিস্টেম স্থাপন এবং সৌরবিদ্যুৎ সংযোগ সম্প্রসারণ প্রকল্প তদারকি করছেন। এই উদ্যোগের ফলে সরকারি অর্থ ও শক্তি সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন দেশের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক।
তিনি শুধু প্রকল্প বাস্তবায়নেই সীমাবদ্ধ নন; সরকারি নথিপত্র ও প্রতিবেদনের স্বচ্ছতা এবং ডিজিটাল রেকর্ডিং সিস্টেম চালু করার মাধ্যমে সরকারি প্রশাসনে উদ্ভাবনী সংস্কৃতি আনার চেষ্টা করছেন। তাঁর উদ্যোগে এখন সমস্ত কাজের অগ্রগতি অনলাইনে মনিটর করা যায়, যা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনে আরও কার্যকরী ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করছে।
সহকর্মীদের ভাষ্য, মো. কায়কোবাদ কঠোর পরিশ্রমী এবং ন্যায়নিষ্ঠ। তিনি অফিসের দায়িত্বে থাকাকালীন কঠোর নির্দেশনা দেন, তবে সহকর্মীদের স্বাধীনতা ও মর্যাদা বজায় রাখেন। তাঁর নেতৃত্বে দলের মধ্যে সমন্বয়, সহযোগিতা এবং দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এক সহকর্মী বলেন, “তিনি আমাদেরকে শুধু কাজ শেখান না, দেশের সেবা শেখান। প্রতিটি প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা দেশের উন্নয়নের অংশীদার হই।”
সম্প্রতি প্রকাশিত অসত্য সংবাদগুলো সরকারি প্রকৌশলীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, অখ্যাত সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কৌশল স্বচ্ছ প্রশাসনের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। মো. কায়কোবাদসহ অন্যান্য প্রকৌশলীরা ইতোমধ্যেই আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, “আমরা চাই না জনগণ বিভ্রান্ত হোক। প্রকল্পের অগ্রগতি ও সরকারি কর্মকর্তাদের কার্যকারিতা নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা রোধ করা আমাদের দায়িত্ব।”
মো. কায়কোবাদ তার কাজের মাধ্যমে দেখিয়েছেন যে, সৎ, দক্ষ এবং প্রযুক্তি-বান্ধব কর্মকর্তারাই দেশের প্রকৌশল প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও পেশাগত মর্যাদা বজায় রাখতে পারেন। তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত প্রকল্পগুলো জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এই ধরনের উদ্ভাবনী এবং দক্ষ কর্মকর্তা থাকলে সরকারি প্রকল্পের বিলম্ব, অনিয়ম ও অপচয় কমানো সম্ভব। কায়কোবাদ শুধু কাজের মান উন্নয়নে মনোযোগী নন, বরং অফিসের অভ্যন্তরীণ সংস্কৃতিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছেন।
প্রকৌশলী মো. কায়কোবাদের কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে যে, সততা, দক্ষতা এবং উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গি সরকারি প্রকৌশল প্রশাসনে সাফল্য ও স্বচ্ছতা আনতে পারে। তার নেতৃত্বে গণপূর্ত অধিদপ্তর জনসেবায় নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
সরকারি প্রকল্পে অজান্তে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা সংবাদ প্রচারের চেষ্টার মধ্যেও কায়কোবাদ তার পেশাগত নীতি অক্ষুণ্ণ রেখেছেন। তাঁর মতো কর্মকর্তাদের দেশ সেবায় আরো বেশি সুযোগ দেওয়া উচিত, যাতে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ হয়।