নবজাগরণ রিপোর্ট:
কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোডে নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনে অংশ নিতে ঢাকায় আসা গাড়িবহরে হামলা ও কটূক্তির ঘটনার প্রতিবাদে ফুসে উঠেছে নোয়াখালীবাসি। শনিবার রাতে ঢাকা চকবাজার থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা ও সাধারণ নোয়াখালীবাসী “নোয়াখালী বিভাগ চাই, বিভাগ চাই-নোয়াখালী বিভাগ চাই!” শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে শাহবাগ এলাকা। তারা বলেন, যারা কুমিল্লার সড়কে নোয়াখালীগামী গাড়ি আটকিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে হেনস্তা করেছে-তারা দেশের ঐক্যবিরোধী কুলাঙ্গার; বিভাজনের বীজ বপনকারী।বিক্ষোভকারীরা দাবি জানায়- “ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যথায় দেশব্যাপী আরও তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”
সাধারণ মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমরা আন্দোলন করছি প্রশাসনিক বিভাজনের ন্যায়সঙ্গত দাবিতে। কিন্তু যারা সড়কে হামলা করে আমাদের মায়েদের, বোনদের, ছাত্রদের গালাগালি দেয়-তারা কেবল নোয়াখালীর শত্রু নয়, গোটা বাংলাদেশের শত্রু।”
উল্লেখ্য, শনিবার সকালে নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়নের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশ শেষে বিভাগ সমর্থকরা নোয়াখালীমুখী গাড়িতে করে ফেরার পথে কুমিল্লার পদুয়ার বাজারে স্থানীয় একদল উস্কানিমূলক ব্যক্তি গাড়ি থামিয়ে হামলা ও কটূক্তি চালায়।
এই ঘটনার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভের ঝড় বইছে। সচেতন নাগরিকরা বলছেন,
“একই দেশের মানুষ হয়ে এমন নোংরামি লজ্জাজনক। এটি নোয়াখালী নয়, গোটা বাংলাদেশের প্রতি অবমাননা।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন-“নোয়াখালী বিভাগ শুধু একটি প্রশাসনিক চাহিদা নয়, এটি উপেক্ষিত জনপদের স্বপ্ন, আত্মমর্যাদার প্রতীক। এই আন্দোলনে হামলা মানে সেই মর্যাদার ওপর আঘাত।”
বিক্ষোভ শেষে শাহবাগ মোড়ে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা ঘোষণা দেন-“যতদিন পর্যন্ত নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়িত না হবে, ততদিন আন্দোলন থামবে না।
হামলাকারীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।”নোয়াখালীবাসীর কণ্ঠে এখন একটাই শ্লোগান- “নোয়াখালী বিভাগ চাই, অবিলম্বে চাই!”
সভাপতি’র বিবৃতি
কুমিল্লার পদুয়ার বাজারে নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনকারীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে
নোয়াখালী জেলা সমিতি, ঢাকার পক্ষ থেকে কুমিল্লা পদুয়ার বাজারে নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনকারীদের ওপর ন্যাক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আজকের এই ঘটনা শুধু নোয়াখালীর মানুষের ওপর নয়-এটি গোটা বাংলাদেশের ঐক্য, সহাবস্থান ও ভ্রাতৃত্ববোধের ওপর আঘাত। নোয়াখালীবাসী দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনিক ন্যায়বিচার ও উন্নয়ন-সমতার দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করে আসছে। অথচ সেই আন্দোলনে অংশ নিতে ঢাকা থেকে ফেরার পথে নিরীহ যাত্রীদের গাড়ি থামিয়ে অপমান, কটূক্তি ও হামলা চালানো ঘৃণ্যতম অপরাধ।
এমন বিভাজনমূলক আচরণ কেবল নোয়াখালীবাসীর হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করেনি-বরং এটি দেশের মানবিক মূল্যবোধ ও রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য এক কালো দাগ হয়ে থাকবে।
আমি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অনুরোধ জানাচ্ছি, দ্রুত এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে।
এবং প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি-নোয়াখালী বিভাগ আন্দোলনের ন্যায়সঙ্গত কর্মসূচিতে যেন কেউ বাধা বা হামলার পরিবেশ সৃষ্টি না করে।
নোয়াখালী জেলা সমিতি, ঢাকা সর্বদা শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক আন্দোলনের পক্ষে। আমরা বিশ্বাস করি, নোয়াখালী বিভাগ প্রতিষ্ঠা হবে উন্নয়ন, প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণ ও জনগণের অংশগ্রহণমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থার পথে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
আমরা ঐক্যবদ্ধ, শান্তিপূর্ণ ও দায়িত্বশীল থাকব-কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদে আপসহীন থাকব।নোয়াখালী বেঁচে থাকুক, বাংলাদেশ জেগে উঠুক।
এম এ খান বেলাল;সভাপতি, নোয়াখালী জেলা সমিতি, ঢাকা।
অনলাইনে পড়তে:www.thenabajagaran.com
#নোয়াখালী_বিভাগ_চাই
#বিভাগ_আন্দোলন
#ঢাকা_বিশ্ববিদ্যালয়_বিক্ষোভ
#Nabojagoron_Report