নবজাগরণ অনলাইন ডেস্ক:
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ইসরায়েলকে ‘গণহত্যাকারী রাষ্ট্র’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে ব্রিকস সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন
। গাজায় ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে তাঁর এই কড়া বক্তব্য আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনার ঝড় তুলেছে।
সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে লুলা দা সিলভা বলেন,
“গাজায় যা ঘটছে তা নিছক সামরিক অভিযান নয়; এটি একটি পরিকল্পিত গণহত্যা। শিশুদের হত্যা, হাসপাতাল ও ত্রাণকেন্দ্র ধ্বংস কোনোভাবেই আত্মরক্ষার যুক্তিতে বৈধ হতে পারে না।”
লুলা আরও বলেন,
“ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর যে পদ্ধতিগত সহিংসতা চালানো হচ্ছে, তা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত। আমরা, ব্রিকস সদস্যরা, এই ধরনের যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেব।”
গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া:
ইসরায়েলি হামলায় গত ২১ মাসে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নারী ও শিশুদের মধ্যে মৃত্যুর হার ভয়াবহ। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা একে ‘মানবিক দুর্যোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। খাদ্য, ওষুধ, পানি ও আশ্রয়ের চরম সংকটে আছে গাজার সাধারণ মানুষ।
ব্রিকস জোটের জোরালো বার্তা:
চলমান সংঘাতের প্রেক্ষিতে ব্রিকস (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং সম্প্রতি যুক্ত হওয়া আরও কয়েকটি রাষ্ট্র) জোট ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আগের চেয়ে শক্ত অবস্থান নিচ্ছে। লুলা দা সিলভার মন্তব্য সেই অবস্থানের প্রতীকী ঘোষণা হিসেবেই ধরা হচ্ছে।
সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া:
এই মন্তব্যের ফলে ইসরায়েল ও তার মিত্র—বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র—ব্রাজিলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্মূল্যায়ন করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই বক্তব্য বিশ্ববাসীর মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রতি সহানুভূতি ও গণআন্দোলনকে আরও জোরালো করবে।
এই বক্তব্য শুধু ব্রাজিল নয়, গোটা বৈশ্বিক দক্ষিণের একটি পরিবর্তিত অবস্থানকেই প্রতিনিধিত্ব করছে—যেখানে নির্যাতিতের পক্ষে, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহসিকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রিকস সম্মেলনে এমন সাহসী অবস্থান নিঃসন্দেহে বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন সুরের সূচনা করেছে।





