রাজউক দুদক মিলে চোরে চোরে মাসতুতো ভাই : অবৈধ ভবন নির্মাণে চিরস্থায়ী প্রথা এখনো বহাল !

মোস্তাফিজুর রহমান : তুষারধারা আবাসিক এলাকা- রাজধানীর জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরত্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাতুয়াইল ইউটার্ন এর দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। রাজধানীর সন্নিকটে হওয়ায় এবং ২০১৫ সনে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিটি কর্পোরেশনের ৬৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওতায় আসলে মধ্যবিত্তের জন্যে প্রাইম লোকেশন হিসেবে খ্যাত।
সেই সূত্রে ডেভেলপার কোম্পানি মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে নিরাপদ বাসস্থানের স্বপ্ন দেখিয়ে রমরমা ফ্ল্যাট বাণিজ্য করলেও মানছেনা নির্মাণ বিধি এবং ভাবছেনা শহরের বাসযোগ্যতা ও নাগরিক সুযোগসুবিধা সর্ম্পকে। যেন তেন ভাবে ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট বিক্রির নামে টাকা হাতিয়ে নিতে পারলেই কাজ সারা।
তবে এতে সহযোগিতা করছে রাজউক, দুদক, সিটিকর্পোরেশন, ভোক্তা অধিকারসহ সরকারি সংস্থাসমূহ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী রিহ্যাব সদস্য না হয়ে ফ্ল্যাট বেচা-কেনা দন্ডনীয় অপরাধ হলেও সরকারি সংস্থাসমূহের ঘুষ গ্রহণের পর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের সুযোগ নিচ্ছে নাম সর্বস্ব ভুয়া ডেভেলপার কোম্পানিগুলো।

২০১৮ সাল থেকেই তুষারধারা আবাসিক এলাকায় ভুয়া ডেভেলপার কোম্পানি কর্তৃক ৮ তলা অনুমোদন নিয়ে ১১ তলা বলে টেম্পারিং ডকুমেন্টে ফ্ল্যাট বিক্রির বিষয়টি নিয়ে সর্বপ্রথম রাজউক ও দুদকে অভিযোগ দাখিল করা হয়। তারপর বিভিন্নসময়ে ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগের সুবাধে দুদকের নির্দেশে রাজউক কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় শুধু অভিযানের নাম করে।
কিন্তু একটি ভবনও নিয়ম মেনে সড়কের জায়গা ছেড়ে নির্মিত হয়নি। ২০২২ সালথেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও একটিও ভবনও নিয়ম অনুসরণ করেনি বরং ফ্ল্যাট ক্রেতাদের পুনরায় ফ্ল্যাট/ভবন রক্ষার্থে দুদক-রাজউককে ঘুষ দিয়ে ভবন রক্ষা করতে হয়েছে। ইতোমধ্যেই ডেভেলপার কোম্পানি টাকা হাতিয়ে গা ঢাকা।
রাজউক যেনো ঘুষ দুর্নিতির এক মহাসত্ত্ব কায়েম করেছে ডেভেলপার কোম্পানি থেকে ঘুষ নিয়ে অবৈধ ভবন নির্মাণের মাধ্যমে। এখন ফ্ল্যাট ক্রেতাদের নিয়মিত ভাবেই ঘুষ প্রদানে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্যথায় পানি/বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে।

রাজউক কর্মকর্তা, র‍্যাব/পুলিশ কর্মকর্তা, থানা , সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা, শিক্ষা ভবনের কম্পিউটার অপারেটর, বদরুন নেসা কলেজের কেরানী, গণপূর্ত সচিবসহ সংঘবদ্ধ একটি সিন্ডিকেট মত্ত হয়ে আছে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ফ্ল্যাট ব্যবসার নামে নিরীহ মানুষের টাকা হাতিয়ে নেয়া।
এ সিন্ডিকেট বিগত সরকারের আমলে আওয়ামীলীগ সেজে সরকারের পৃষ্টপোষকতায় মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে আর এখন ধর্মীয় লেবাসের আড়ালে ফ্ল্যাট ব্যবসার নামে প্রতারণার অবৈধ কার্যকলাপ পরিচালনা করছে।
তুষারধারা আবাসিক এলাকার ৪নং সেক্টরস্থ YES TOWER জায়গা না ছেড়েই অবৈধ ভাবে ১৩ তলা ভবন নির্মান করেছেন। ফলে এখন রাস্তা পাকা করতে গিয়ে ১২ ফুটও পাকা করা সম্ভব হচ্ছে না।

উল্লেখ্য যে সাবেক রাজউক চেয়ারম্যান আনিচুর রহমান মিয়া নগরবাসীর জন্য আধুনিক শহর উপহার দিবেন বলে আশ্বস্ত করেছিলেন। রাজউক এ যোগদান করে অভিযান শুরু করলেও অদৃশ্য শক্তিশালী সেন্ডিকেটের কাছে হেরে যান । কাগুজে কলমে রক্ষিত থাকলেও নেই বাস্তবায়ন। এখন ফাঁকা বুলি মাঠ কাঁপাচ্ছে। রাজধানীতে আগুনের সূত্রপাত হলে রাজউক ও ফায়ার সার্ভিসের ঘুম কেড়ে নেয়। এমনভাবে দায়িত্ব পালন করেন তাঁতে বোঝাতে চান তাঁদের চেষ্টায় কোনো ঘাটতি ছিলোনা । তবে মাস শেষে ওই চেষ্টা এবং আন্তরিকতা হিমাগারে পতিত হয়।