নোয়াখালী জেলা সমিতির নির্বাচন : বৈষম্যের শেকল ভেঙে ১২০ বছরের নবজাগরণ

নবজাগরণ রিপোর্ট :
নোয়াখালী জেলা সমিতির এবারের নির্বাচন কেবল একটি প্রবাসী সংগঠনের নেতৃত্ব বাছাই নয়-এটি ১২০ বছরের বৈষম্য, বঞ্চনা আর সিন্ডিকেটশাসনের বিরুদ্ধে এক বিপ্লবী গণজাগরণের নাম। দীর্ঘদিন ধরে এই সংগঠন ছিল কয়েকজন সুবিধাভোগী ব্যক্তির পকেট ভারী করার হাতিয়ার। আজীবন সদস্যরা ভোটাধিকারবঞ্চিত, অফিস ছিল জরাজীর্ণ, সাধারণ প্রবাসী নোয়াখালীবাসীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল প্রায় ছিন্ন। এক কথায়, নোয়াখালী জেলা সমিতি হয়ে পড়েছিল ইতিহাসের এক মৃতপ্রায় দেহ।

কিন্তু ইতিহাস চিরকাল একই থাকে না। দমিয়ে রাখা মানুষেরা একদিন উঠে দাঁড়ায়। এম এ খান বেলাল ও আবদুল মাবুদ দুলালের নেতৃত্বে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল-তা শেষ পর্যন্ত পরিণত হলো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের বিজয়ে। এই নির্বাচন ছিল বৈষম্যের শেকল ভাঙার নির্বাচন। ছিল গুটিকয়েক সুবিধাভোগীর বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের বিপ্লব।

বৈষম্যের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ-
দশকের পর দশক আজীবন সদস্যরা ভোটাধিকারহীন ছিলেন-এ যেন প্রবাসী সমাজে এক ধরনের স্বৈরাচার। সেই অন্ধকার ভেঙে আলো ফিরিয়ে আনেন বেলাল-দুলাল পরিষদ। গঠনতন্ত্র সংশোধন করে তাঁরা আজীবন সদস্যদের হাতে ফিরিয়ে দেন তাঁদের মৌলিক অধিকার-ভোটাধিকার। এটি কেবল একটি সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি ছিল এক ধরনের বিদ্রোহ। যারা দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীদের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছিল, এই নির্বাচনের ফলাফল তাদের জন্য এক নির্মম প্রত্যাখ্যান।

নেতৃত্বের নবদিগন্ত-
এম এ খান বেলাল : একজন স্বপ্নদ্রষ্টা উদ্যোক্তা, যিনি ব্যক্তিগত সাফল্যকে রূপ দিয়েছেন জনকল্যাণে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়নে তাঁর অবদান তাঁকে সাধারণ মানুষের আস্থার প্রতীক করেছে।
আবদুল মাবুদ দুলাল : প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হয়েও যিনি জনগণের পাশে থেকেছেন। সততা, দক্ষতা আর মানবিকতা মিলিয়ে তিনি আজ নোয়াখালীবাসীর জনকল্যাণের সৈনিক।

কে এম মোজাম্মেল হক : চার দশকের অভিজ্ঞ প্রশাসক, যিনি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির প্রতীক হয়ে পরিষদকে শক্তিশালী করেছেন। এই ত্রয়ীর নেতৃত্ব কেবল একটি কমিটির নেতৃত্ব নয়-এটি হলো এক বৈষম্যবিরোধী নবজাগরণের নেতৃত্ব।

প্রতিপক্ষের পতন-
অন্য প্রার্থীরা ছিল বিভক্ত, দিশাহীন, কর্মপরিকল্পনাহীন। ভোটারদের আস্থা অর্জন তো দূরের কথা, নিজেদের মধ্যেই ঐক্য গড়তে পারেনি তারা। ইতিহাস সাক্ষ্য দিল-জনগণ কখনো বিভক্ত নেতৃত্বকে সমর্থন করে না।
ভোটারদের বিপ্লবী বার্তা-ভোটাররা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন-“আর নয় বৈষম্য, আর নয় অন্ধকার, আমরা চাই নবজাগরণ।”

সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, বেগমগঞ্জ থেকে শুরু করে ঢাকায় বসবাসরত সাধারণ প্রবাসী নোয়াখালীবাসী পর্যন্ত-সবার কণ্ঠে একই স্লোগান, “বেলাল-দুলাল পরিষদের বিকল্প নেই।”

১২০ বছরের অপেক্ষার অবসান-
নোয়াখালী জেলা সমিতির ইতিহাসে এই বিজয় এক মাইলফলক। এটি কেবল নেতৃত্বের পরিবর্তন নয়, এটি একটি দাসত্বমুক্তির ঘোষণা। বৈষম্যের অন্ধকার ভেঙে প্রবাসী সমাজ পেয়েছে আলো। গণতন্ত্র ফিরে এসেছে। তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে। আজ থেকে নোয়াখালী জেলা সমিতি আর কারো পকেট সংগঠন নয়-এটি হলো প্রবাসী নোয়াখালীবাসীর গণতান্ত্রিক শক্তি।

বেলাল-দুলাল পরিষদের বিজয় আমাদের মনে করিয়ে দেয়-জনগণ চাইলে ইতিহাস বদলায়, বৈষম্য ভেঙে ফেলে, অন্ধকারকে ছিঁড়ে ফেলে নতুন আলোর পথ তৈরি করে। এই বিজয় কেবল একটি পরিষদের নয়, এটি সমগ্র প্রবাসী নোয়াখালীবাসীর বিজয়।
১২০ বছরের অপেক্ষার পর আজ নবজাগরণের সূর্য উঠেছে। নোয়াখালী জেলা সমিতি আজ ঘোষণা করছে-
“আমরা বৈষম্য ভেঙেছি, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়েছি, আমরা নবজাগরণ এনেছি।”

প্রতিবেদন: মো: আবু তাহের পাটোয়ারী
www.thenabajagaran.com