রক্তাক্ত অতীতের অবসান: বেগমগঞ্জে নৃশংস বিজয় হত্যা মামলার পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী দেলু গ্রেপ্তার

মোঃ শহিদুল ইসলাম খোকন (নোয়াখালী) প্রতিনিধি:
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কের নাম হয়ে ওঠা শীর্ষ সন্ত্রাসী দেলোয়ার হোসেন ওরফে দেলুকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১১। সাহসিকতার সঙ্গে এক নিরীহ মানুষকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রাণ হারানো মারওয়ান হোসেন ওরফে বিজয় হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি ছিলেন দেলু।২৪ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে র‍্যাব-১১,সিপিসি-৩, নোয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও কোম্পানি কমান্ডার মো:মুহিত কবীর সেরনিয়াবাত এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে বেগমগঞ্জ কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের সামনে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত দেলু বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের কাম বেপারী বাড়ির বাসিন্দা ছায়েদুল হকের ছেলে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সহিংস কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
নিরীহ মানুষ বাঁচাতে গিয়ে শহীদ বিজয়ন র‍্যাব জানায়, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে শরীফপুর ইউনিয়নের নতুন ব্রিজ এলাকায় পূর্বশত্রুতার জেরে একদল সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে এক নিরীহ ব্যক্তিকে মারধর শুরু করে। সে সময় পথচারী মারওয়ান হোসেন ওরফে বিজয় মানবিক দায়বদ্ধতা থেকে এগিয়ে এসে ওই নিরীহ মানুষটিকে রক্ষা করতে চেষ্টা করেন।
এই ঘটনাতেই সন্ত্রাসীরা বিজয়ের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ধারালো রামদা ও ছোরা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে তাকে গুরুতর জখম করা হয়। ঘটনাস্থলেই চারদিকে রক্তে ভেসে যায় এলাকা। পরে স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মামলা,পলাতক জীবন ও গ্রেপ্তার এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলার ২ নম্বর আসামি দেলু ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে ছিলেন। একাধিকবার অবস্থান পরিবর্তন করে তিনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে চলছিলেন।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-৩-এর কোম্পানি কমান্ডার মো: মুহিত কবীর সেরনিয়াবাত জানান,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দীর্ঘ নজরদারির পর নিশ্চিত অবস্থান শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে দেলুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে বেগমগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।এলাকাবাসীর দাবি-দৃষ্টান্তমূলক বিচার
শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারের খবরে বেগমগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। স্থানীয়রা বলছেন,বিজয় ছিলেন মানবতার পক্ষে দাঁড়ানো এক সাহসী তরুণ। তার হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে এলাকায় অপরাধ দমন সম্ভব হবে না। এ ঘটনায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলা নিষ্পত্তি ও সকল আসামিকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।